লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জানুন

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়প্রিয় পাঠক, আপনি কি লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। কেননা আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই জানার জন্য অবশ্যই শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা
আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি লেবু খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে লেবু খাওয়ার উপকারিতা, খালি পেটে লেবু খাওয়ার অপকারিতা, ত্বকের যত্নে লেবুর উপকারিতা এবং চুলের যত্নে লেবুর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পেজ সূচিপত্রঃ

লেবু খাওয়ার নিয়ম

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতাগুলো জানার পূর্বে আমাদের সকলকেই লেবু খাওয়ার নিয়ম ও সঠিক পদ্ধতিগুলো জানতে হবে। কারণ আপনি যদি লেবু খাওয়ার জন্য সঠিক নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে এর উপকার উপভোগ করতে পারবেন না। তাই আসুন শুরুতেই আমরা লেবু খাওয়ার নিয়ম এবং সঠিক পদ্ধতিগুলো জেনে নেই।

আপনি যেকোন উপায়েই লেবু খেতে পারেন। তবে যদি আপনি এটিকে একটি নিয়মের আওতায় নিয়ে এসে খান তাহলে এটি আপনার জন্য অনেক বেশিই উপকার নিয়ে আসতে পারে। লেবু যদি আপনি নিয়মিত গ্রহণ করেন তাহলে এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি উপাদানটি আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রবেশ করবে। যার ফলে আপনি অনেক ধরণের রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। নিম্নে লেবু খাওয়ার জন্য বেশ কিছু নিয়ম উল্লেখ করা হলো। চলুন দেখে নেই।
  • লেবু আপনি শরবত বানিয়েও খেতে পারেন। এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে প্রথমে একগ্লাস পানি, তার সাথে তিন চা চামচ পরিমাণ চিনি, এক চিমটি লবণ এবং এর সাথে কিছুটা লেবুর রস। তারপরে এটি মিশ্রণ করলেই একটি শরবত তৈরি হয়ে যাবে। আপনি যদি সারাদিনে কাজকর্ম শেষ করে এটি খান তাহলে এটি আপনার শরীরের সকল ধরণের ক্লান্তি দূর করতে সহযোগিতা করবে।
  • এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে কিছুটা লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে খেতে পারেন।
  • তিনবেলা খাবার খাওয়ার সময়ে ভাতের সাথে মিশিয়ে নিয়েও লেবুর রস খেতে পারেন।
  • এখন যেহেতু গরমের সময়, তাই এই সময়ে বাহিরে অনেক জায়গাতেই লেবু রস দিয়ে সরবত তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। আপনি সেখান থেকেও খেতে পারেন।
  • অনেক হোটেল বা রেস্টুরেস্টে এখন বিরিয়ানির সাথে লেবুর রস মিশানো হয়। এতে করে সেই বিরিয়ানির স্বাদ এবং সুগ্রান আরো উন্নত হয়।

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলোর মধ্যে লেবুর উপকারিতার দিকগুলো অপকারি দিকের থেকে অনেকটাই বেশি। আমরা যেহেতু সকলেই কমবেশি লেবু খেতে পছন্দ করে থাকি তাই আমাদের সকলেরই এই বিষয়ে কিছুটা হলেও জ্ঞান রাখা উচিত। তাই আমরা সকলেই এখন প্রথমে লেবুর উপকারিতা গুলো তারপরে লেবুর উপকারিতাগুল জানবো। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা
লেবুর উপকারিতাগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ টক স্বাদযুক্ত এই লেবু যদি নিয়মিত খাওয়া হয় তাহলে এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। কারণ লেবুতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যেটি আমাদের শরীরের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নয়ন করার জন্য কাজ করে থাকে। যদি আপনার জ্বর অথবা সর্দি থেকে থাকে তাহলে আপনি লেবু খান ঠিক হয়ে যাবে।
শরীরের ওজন কমানোর জন্য সহায়কঃ যদি আপনি প্রতিদিন একগ্লাস লেবু পানির সাথে কিছুটা পরিমাণ মধু মিশিয়ে খান তাহলে এটি আপনার শরীরের ওজন কমানোর জন্য অনেক ভালো কাজ করবে। লেবুতে থাকা প্রয়োজনীয় ফাইবার খাওয়ার পরে অনেকটাই প্রসারিত হয়। যেটি আপনাকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তৃপ্ত রাখতে সহায়তা করে। যার ফলে এটি আপনার সারাদিনে অতিরিক্ত কোন খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখে।

খাবার হজমে সহযোগিতা করেঃ লেবুতে ফাইবার রয়েছে। এই প্রধান ফাইবারটির নাম হলো পেকটিন। যেটি আমাদের শরীরের অন্ত্রের কাজের ক্ষেত্রে এবং খাবার হজম করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে।

শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করেঃ যদি আপনি প্রতিদিন নিয়মিত লেবু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন তাহলে এটি আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকটাই কমিয়ে দেবে। এছাড়াও লেবুতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডও। যেটি ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এলডিএল এর পরিমাণ কমানোর জন্য প্রমাণিত।

কিডনির পাথর প্রতিরোধ করেঃ এমন অনেকেই রয়েছেন যারা কিডনির পাথর জনিত সমস্যায় ভুগছেন। আপনার এই সমস্যা আরো মারাত্মক আকার ধারণ করার পূর্বে আপনি প্রতিদিন লেবু খাওয়ার অভ্যাগ গরুন। তাহলে আপনি এই ধরণের ঝুঁকিকে মোকাবেলা করতে সক্ষম হবেন। লেবু হলো সাইট্রাস ফল। যার জন্য এটিতে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক এসিড রয়েছে। যেটি আপনার কিডনির পাথরের সমস্যাকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে থেকে আমরা ইতিপূর্বে লেবুর উপকারিতাগুলো সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা সকলেই লেবুর অপকারি দিকগুলো সম্পর্কে জানবো। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

দূর্বলতাঃ যদি আপনি প্রতিদিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি পরিমাণে লেবুর শরবত বা লেবুর রস খেয়ে ফেলেন তাহলে এর ফলে আপনার শরীরে কিছুটা দূর্বলতা অনুভব হতে পারে।

রক্তে আয়রনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়ঃ আমরা সকলেই জানি লেবুতে উপকারি উপাদান হিসেবে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আর এটি যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করেন তাহলে এটি রক্তে আয়রণের সংরক্ষণ করতে সহায়তা করে থাকে। যার ফলস্বরুপ রক্তে আয়রণ গচ্ছিত হতে থাকে। যেটি আমাদের শরীরের জন্য অনেকটাই ক্ষতিকারক।

বুক জ্বালা-পোড়া করাঃ আপনারা এমন অনেকেই রয়েছেন যারা এসিডিটির সমস্যায় ভুগছেন।এই সময়ে যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে লেবুর শরবত খেয়ে ফেলেন তাহলে এটি আপনার বুক জ্বালা-পোড়ার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।

পেট ব্যাথাঃ আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু অথবা লেবুর শরবত খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার তলপেটে ব্যাথা করতে পারে।

গ্যাস, পেট ফাঁপাঃ যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে প্রতিদিন লেবুর রস খেয়ে থাকেন তাহলে এটি আপনার গ্যাস, পেট ফাঁপা সহ আরো অনেক ধরণের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

খালি পেটে লেবু খাওয়ার উপকারিতা

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা জানার পরে আবার অনেকেই জানতে চান খালি পেটে লেবু খাওয়ার উপকারিতাগুলো সম্পর্কে। অনেকেই শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য সকালে খালি পেটে শুধু লেবু অথবা লেবুর সাথে কিছুটা গরম জল মিশিয়ে খান। এটি খাওয়ার ফলে আপনার কি কি উপকার হতে পারে সেই সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। এই পাঠের মধ্যে আমরা এই সম্পর্কেই জানবো চলুন।
  • যদি সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হালকা গরম পানির সাথে কিছুটা লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে এটি আমাদের শরীরের পিএইচ মাত্রা ঠিক রাখে। যার ফলে সম্পূর্ণ একটি দিন আমাদের থাকে কর্মক্ষম রাখে। তার পাশাপাশি এটি আমাদের শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
  • প্রতিদিন সকালে গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে এটি আমাদের খাবারের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
  • যদি আপনি প্রতিদিন সকালে নিয়মিত লেবু পানি পান করেন তাহলে এটি আপনার শরীরের মেদ কমাতে এবং অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য সাহায্য করবে।
  • চিনি ছাড়া লেবুর শরবত পান করলে এটিতে থাকে ভিটামিন সি আমাদের স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে থাকে।
  • যদি লেবু প্রতিদিন খাওয়া হয় তাহলে এটি আমাদের ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এটি আমাদের শরীরের এন্টি-অক্সিডেন্টের চাহিদাও পূরণ করে থাকে। যার ফলে কিডনিতে পাথরের সমস্যা দূর হয়।
  • লেবু পানি পান করার ফলে আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।
  • যদি আপনি প্রতিদিন সকালে লেবু পানি পান করেন তাহলে এটি আমাদের শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করবে। তবে এর জন্য অবশ্যই আপনাকে গোটা দিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • প্রতিদিন নিয়মিত লেবুর রস খেলে আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন-সি এর যোগান দেয়। যেটি আমাদের শরিরের এন্টি-অক্সিডেন্টের অনেক বড় একটি উপাদান।
  • শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে।

খালি পেটে লেবু খাওয়ার অপকারিতা

ইতিপূর্বে আমরা সকলেই খালি পেটে লেবু খাওয়ার উপকারিতা এবং তার পূর্বে লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। এখন এই পর্বের মধ্যে আমরা জানবো খালি পেটে লেবু খাওয়ার অপকারিতাগুলো কি কি সেই সম্পর্কে। প্রতিটি জিনিসেরই অনেকগুলো উপকারিতার পাশাপাশি বেশকিছু অপকারিতাও রয়েছে। তেমনি লেবুও এর ব্যাতিক্রম নয়। তাই চলুন আমরা এই পর্বের মাধ্যমে জেনে নেই যদি সকালে খালি পেটে লেবু খাওয়া হয় তাহলে কি কি অপকারিতাগুলো হয়ে থাকে।
খালি পেটে লেবু খাওয়ার অপকারিতা
এনজাইম তৈরি করেঃ যদি আপনি প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে খালি পেটে লেবু পানি পান করে থাকেন তাহলে এটি আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচক পেপসিনকে ভেঙে ফেলবে। আর এই পেপসিন নামক উপাদানটি আমাদের শরীরের খাবার হজম করার জন্য সাহায্য করে থাকে। আর এই উপাদানটি ভাঙে নিয়ে এটি আমাদের শরীরে ক্ষতিকারক এনজাইম তৈরি করে থাকে। যার জন্য আমাদের খাবার ঠিক ঠাক হজম হতে সমস্যা হয়।

অ্যাসিডিটি সমস্যাঃ আমরা সকলেই জানি আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন-সি অনেকটাই জরুরি। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিস-সি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। যার জন্য আমাদের শরীরের অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দাঁত ও হাঁড়ে সমস্যা সৃষ্টিঃ সম্প্রতিক সময়ে একটি গবেষণার মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে, আমরা কোমল পানিয় খেলে আমাদের শরীরে যেই ধরণের ক্ষতি হয়ে থাকে, ঠিক তেমনি যদি আমরা প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে গরম পানির সাথে লেবু মিশিয়ে খাই তাহলেও আমাদের ঠিক তেমনই ক্ষতি হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে দাঁত ও হাঁড়ে সমস্যা। এটি খাওয়ার পরে যদি কোন ব্যাক্তি নিয়মিত দিনে দুইবার দাঁত ব্রাশ না করে তাহলে তার আরো বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রক্তে আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি করেঃ আমাদের সকলের শরীরের জন্য একটি অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান হলো আয়রোন। অতিরিক্ত ভিটামিন সি আমাদের শরীরে আয়রণের মাত্রা অনেকটা বৃদ্ধি করে দেয়। আপনি জানলে অবাক হবেন আমাদের শরীরের জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে আয়রন অনেকটাই ক্ষতিকর। যার জন্য আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনি যদি খালি পেটে লেবু পানি পান করতে চান তাহলে সেটা সিমিত আকারে পান করাই উত্তম।

ত্বকের যত্নে লেবুর উপকারিতা

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতাগুলো মধ্যে একটি হলো ত্বকের যত্নে লেবুর উপকারিতা। লেবুর যত প্রকার এর গুনাগুন রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো ত্বকের যত্নের জন্য লেবুর উপকারিতা। তবে শুধুমাত্র লেবু মুখে লাগিয়ে রাখলেই হবে না। এটিকে সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে। তাই চলুন বন্ধুগণ কোন নিয়মে লেবু ত্বকে ব্যবহার করলে আপনি কোন উপকারিতা গুলো পাবেন সেই সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ত্বকের যত্নে লেবুর উপকারিতা
লেবু ও মধুঃ যদি আপনি আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা করতে চান তাহলে প্রথমে আপনাকে লেবু কেটে নিয়ে তার থেকে রস বের করে নিতে হবে। এরপর লেবুর রসের সাথে দুই চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে এই মিশ্রণটি ত্বকের ওপর লাগিয়ে নিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যখন একটি শুকিয়ে আসবে তখন পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে মধু ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য কাজ করবে এবং লেবু আপনার ত্বককে ফর্সা করার জন্য সহযোগিতা করবেন।

লেবু ও দুধঃ আপনার ত্বকের যদি পোড়াভাব থেকে থাকে তাহলে এটি সরানোর জন্য লেবুর রসের সাথে কিছুটা পরিমাণ দুধ মিশিয়ে নিয়ে একটু মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করুন। এই মিশ্রণটির মুখে লাগিয়ে রাখার পরে যখন হালকা শুকিয়ে আসবে তখন ধুয়ে ফেলবেন। এটি আপনার ত্বকের পোড়াভাব দূর করার জন্য সাহায্য করবে।

চালের গুড়ো ও লেবুঃ যদি আপনার হাত পায়ে রুক্ষ ভাব থেকে থাকে তাহলে এটি দূর করার জন্য লেবুর রসের সাথে কিছুটা পরিমাণ চালের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। তারপরে আপনার হাতে এবং পায়ে ভালোভাবে লাগান। এটি ব্যবহার করার ফলে দেখবেন আপনার ত্বক আগের তুলনায় অনেকটাই বেশি কোমল হয়ে গিয়েছে।
লেবু ও শশার রসঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন যাদের ত্বক বেশিরভাগ সময়েই অতিরিক্ত তৈলাক্ত থাকে। আপনার ত্বকের এই তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য কিছুটা পরিমান শসার রসের সাথে একটি লেবুর রস মিশিয়ে নিন। তারপরে এটি আপনার ত্বকের ওপর লাগিয়ে রাখুন। এটি আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য এবং আপনার ত্বককে সতেজ করতে সহযোগিতা করবে।

লেবু ও ডিমঃ লেবুর সাথে কিছুটা পরিমাণ ডিমের সাদা অংশ এবং তার সাথে এক টেবিল চামচ পরিমাণ কমলার রস গরম জলে মিশিয়ে নিয়ে সেটি আপনার আপনার ত্বকের ব্যবহার করুন। ত্বকে লাগানোর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে যখন এটি শুকিয়ে আসবে তখন এটি ঠান্ডা পানি দিয়ে খেয়ে ফেলুন। এটি আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করার পাশাপাশি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতেও সহযোগিতা করবে।

চুলের যত্নে লেবুর উপকারিতা

চলের জত্ন হিসেবেও লেবুর অনেকটাই বেশি উপকার রয়েছে। লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতাগুলোর মধ্যে এটিও একটি লেবুর উপকারিতা। আমরা আমাদের চুলের সমস্যার সমাধানের জন্য অনেক কিছুই তো ব্যাবহার করে থাকি। বাজার থেকে কত নামি দামি জিনিস পত্রই তো ব্যাবহার করি। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন আপনার এই চুলের সমস্যার সমাধান দিতে পারে এই লেবু। চলুন তাহলে এটি আমাদের চুলের জন্য কোন কোন উপাকার করে সেটি জেনে নেই।
চুলের যত্নে লেবুর উপকারিতা
চুলের বৃদ্ধি দ্রুত করেঃ যদি আপনি নিয়মিত জলপাই তেল, নারকেল তেল ও লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে নিয়ে প্রতিদিন চুলে লাগান তাহলে এটি আপনার চুলে ঝলমলে ভাব বৃদ্ধি করার পাশাপাশি এটি চুল ও লম্বা করবে খুব দ্রুত।

চুলের আগা ফাটা রোধঃ যদি আপনার চুলের আগা ফেটে যায় তাহলে সেটি কমানোর জন্য জলপাই তেলের সাথে কিছুটা লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে চুলে লাগান। চুলে লাগানোর ২০ মিনিট পরেই ধুয়ে ফেলুন। যদি আপনি প্রতি সপ্তাহে একদিন করে এমনটি করেন তাহলে এটি ৩ সপ্তাহের মধ্যেই আপনার এই সমস্যার সমাধান করে দিবে।

চুল ঝড়া কমাতেঃ চুলের ঝড়ে যাওয়া রোধ করার জন্য ভিনেগা, কিছুটা লবণ এবং লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে চুলে লাগান। এটি আপনার চুল ঝড়া রোধ করার জন্য অনেকটাই সহযোগিতা করবে।

চুলের কন্ডিশনারঃ আপনার চুলের কন্ডিশনার হিসেবে লেবুর রসের সাথে কিছুটা নারকেল এর পানির সাথে মিশিয়ে নিয়ে ব্যাবহার করতে পারেন। এটি আপনার চুলের কন্ডিশনার হিসেবে অনেকটাই ভালো কাজ করবে। এতে করে আপনার চুল ঝলমলে হতেও সহযোগিতা করবে।

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃ অতিরিক্ত লেবুর রস খেলে কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ যদি প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু খাওয়া হয় তাহলে এটি আমাদের দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে থাকে। তার পাশাপাশি এটা আমাদের দাঁতকে ভেতরে করে দূর্বল করে তোলে।

প্রশ্নঃ লেবু বেশি খেলে কি কি সমস্যা হয়?
উত্তরঃ যদি প্রতিদিন অনেক বেশি পরিমাণে লেবু খাওয়া হয় তাহলে এটি আমাদের এসিডিটির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। এছাড়াও এর ফলে বমি বমি ভাব অথবা বমি হতেও পারে।

প্রশ্নঃ রাতে ঘুমানোর আগে লেবু পানি খেলে কি হয়?
উত্তরঃ যদি রাতে ঘুমানোর পূর্বে লেবুর রস খাওয়া হয় তাহলে এটি আমাদের শরীরকে অনেকটাই আরাম এনে দেয়। এছাড়াও এটি আমাদের মানসিক চাপ কমানোর জন্য অনেকটাই ভালো কাজ করে।

প্রশ্নঃ লেবুতে কি ভিটামিন পাওয়া যায়?
উত্তরঃ লেবুতে ভিটামিন হিসেবে ভিটামিন-সি পাওয়া যায়।

প্রশ্নঃ লেবু পানি কি চুলের জন্য ক্ষতিকর?
উত্তরঃ লেবু চুলের জন্য তখনই ক্ষতিকর হবে যখন আমরা আমদের মাথায় সরাসরি লেবুর রস ব্যাবহার করবো। যদি সরাসরি মাথায় লেবুর রস ব্যাবহার করা হয় তাহলে এটি আমাদের মাথার প্রাকৃতিক তেল দূর করে দিবে এছাড়াও চুলের শুষ্কতা করে এবং সম্ভাব্য ক্ষতি করতে পারে।

প্রশ্নঃ লেবুর রস কি চুল গজাতে সাহায্য করে?
উত্তরঃ লেবুর রসে অনেক ধরণে পুষ্টি রয়েছে যেটি আমাদের চুলকে অরো অনেক শক্তিশালী করতে এবং নতুন চুলকে গজানোর জন্য উৎসাহ দেয়। যার জন্য চুল নতুনরূপে গজায় থাকে।

প্রশ্নঃ লেবুর রসের পিএইচ এর মান কত?
উত্তরঃ লেবুর রসের পিএইচ এর মান হলো ২.২। যার মধ্যে ৫%-৬% হলো সাইট্রিক এসিড। আর এজন্যই লেবু এতটা টকস্বাদযুক্ত হয়ে থাকে।

শেষ কথা

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও আরো কিছু টপিক নিয়ে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। যদি আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না। এমন আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন পড়ার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পেপারস্পট২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url