জান্নাতি ২০ সাহাবীর নামপ্রিয় পাঠক, পুরুষদের ও মহিলাদের ওযু করার সুন্নত তরিকাগুলো আজকে আমরা এই
পাঠের মধ্যে জানবো। কেননা ওজুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করে তারপরে সালাত আদায়
করতে হয়। তাই চলুন আমরা সকলেই পুরুষদের ও মহিলাদের ওযু করার সুন্নত তরিকাগুলো
জেনে নেই।
আজকের আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়লে ওযু করার গুরুত্ব ওযু করার নিয়ত ওযু
করার দোয়া ওযুর সুন্নত কয়টি ওযুর ফরজ ওয়াজিব মুস্তাহাব কয়টি ওযু করার সঠিক
নিয়ম এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। চলুন এখন তাহলে অজু করার সুন্নত তরিকা
সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ পরুষদের ও মহিলাদের ওযু করার সুন্নত তরিকা
ওযু কাকে বলে
আমরা মুসলিম হিসেবে সালাত আদায় করার জন্য পূর্ব শর্ত হলো ওযু করে নিজেকে পাক
পবিত্র করে নেওয়া। ওযু করার মাধ্যমে শরীর পবিত্র করে নেওয়া হয়। ওযু করা
প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। এ সম্পর্কে সৃষ্টিকর্তা কোরআন শরীফে অনেক দিক
নির্দেশনা বর্ণনা করেছেন।
আর পবিত্রতা হাসিলের উদ্দেশ্যে হাতের আঙ্গুলের মাথা থেকে কোনুই পর্যন্ত পরিষ্কার
ভাবে ধৌত করে নেওয়া হয়। চলুন এখন অজু কাকে বলে জেনে নেই। ওযু কাকে বলে। এমন
প্রশ্নের উত্তরে বলতে গেলে, ওজু হলো ইসলামের শরীয়তের দৃষ্টিতে হাতের আঙ্গুলের
মাথা থেকে কনুই পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে ধৌত করা।
রোজা রাখা ব্যতীত গড়গড়া সহ কুলি করা, নাকের নরম স্থান পর্যন্ত হাতের আঙ্গুল
দিয়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধৌত করা এবং পায়ের গোড়ালি সহ পরিষ্কার পানিতে ধৌত
করাকে ওযু বলে। এ পর্যায়ে আপনারা জানলেন যে ওযু কাকে বলে।
ওযুর গুরুত্ব
নামাজ আদায় করার পূর্ব শর্ত হল ওযু করে নেওয়া। কেননা নামাজ যেমন জান্নাতের
চাবিকাঠি, তেমনি ওযু হলো নামাজের চাবি। আমরা একজন মুসলিম হিসেবে প্রতিদিন পাঁচ
ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার পূর্বে ওযু করে পবিত্র হয়ে নেওয়া ফরজ।
আর ফরজ মানে অবশ্যই পালন করতে হবে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে, "নিশ্চই আল্লাহ
তওবাকারীকে ভালবাসেন এবং যাহারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালবাসেন"। এছাড়াও কোরআন
শরীফ স্পর্শ করার বিষয়ে ওযু করার কথা উল্লেখ আছে কোরআন শরীফে।
এ বিষয়ে কোরআন শরীফে বর্ণিত আছে "যাহারা পূত-পবিত্র তাহারা ব্যতীত অন্য কেহ তাহা
স্পর্শ করো না" (সূরা ওয়াক্কিয়াহ্, আয়াত:৭৯)। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।
আর প্রত্যেক মুসলমান নর ও নারীদের জন্য পবিত্রতা অর্জন করা ফরজ। আর আল্লাহ
তায়ালা অপবিত্র ব্যাক্তিকে পছন্দ করেন না। যার জন্য আমাদের সবসময় ওযু করে
পবিত্র থাকা উচিত। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার মাহাত্ম্য লাভ করা যায়।
ওযুর নিয়ত
যে কোন কাজ শুরু করার পূর্বে আমাদের নিয়ত করা উচিত। একটা কাজ শুরু করার পূর্ব
শর্ত হলো সেই কাজের জন্য নিয়ত করা। কাজ শুরু করার পূর্বে নিয়ত করলে সেই কাজ
সম্পন্ন হওয়ার প্রায় অর্ধেক সম্পন্ন হয়ে যায়।
আর আমাদের সব সময় ওযু করে পবিত্র থাকা আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত। তিনি তার উম্মতদের সবসময় ওযু করে
পবিত্র থাকতে বলে গেছেন। তাহলে চলুন এখন ওযুর নিয়ত সম্পর্কে জেনে নেই।
আরো পড়ুনঃ নামাজের ভিতরে বাহিরে ১৩ ফরজ কি কি
ওজু শুরু করার পূর্বে অবশ্যই "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" পড়ার কথা হাদীসে
বলা হয়েছে। ( আবু দাউদ-১/১৪, তিরমিজী-১/১৩, কিতাবুল আজকার-২/২ )।
ওযুর নিয়ত হলোঃ নাওয়াইতু আন আতাওয়াজ্জায়া লিরাফয়িল হাদাসি ওয়া
ইস্তিবাহাতা লিছছালাতি ওয়া তাকাররুবান ইলাল্লাহি তা’য়ালা। এর অর্থ হলো আমি ওযুর
নিয়ত করছি যে নাপাকি দূর করার জন্য বিশুদ্ধরূপে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্য এবং
আল্লাহ তা’য়ালা।
ওযু করার শেষের দোয়া হলঃ "আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু
ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া
রাসুলুহু"।
এর অর্থ হলোঃ "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি ও
অদ্বিতীয় তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মাদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।" (মুসলিম, মিশকাত)
অজু করার দোয়া
ওযু করা আমাদের প্রত্যেক নর-নারীর জন্য ফরজ। মুসলিমদের জন্য পবিত্রতা অর্জনের
একটি প্রধান মাধ্যম হল অজু করা। আমরা অনেকেই জানিনা যে অজু করার সময় কোন
দোয়াটি পড়তে হয়।
অজুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হাদিসে চারটি দোয়া করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
যার মাধ্যমে অনেক ফজিলত লাভ করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে হাদিসে।
ওযু করার জন্য চারটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
- অজুর কুরার শুরুতে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বলে ওযু শুরু করতে হবে।
- ওযু করার সময় এ দোয়াটি সবসময় মনে মনে বেশি বেশি পড়তে হবে। দোয়াটি হলঃ "আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসিলি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফি রিযক্বি"। (নাসাঈ)
- ওযুর শেষে কালেমায় শাহাদতের সাক্ষ্য দিতে হবে। কালেমা শাহাদত হলোঃ "আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু"। এর অর্থ হলোঃ "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি ও অদ্বিতীয় তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।" (মুসলিম, মিশকাত)
- ওযু করার শেষে কালেমায় শাহাদতের সাক্ষ্য দেওয়ার পরে এই দোয়াটি পড়তে হবে। "আল্লাহুম্মাঝআলনি মিনাত তাউয়্যাবিনা ওয়াঝআলনি মিনাল মুতাত্বাহ্হিরিন"। এর অর্থ হলোঃ "হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের মধ্যে শামিল করে নিন" (তিরমিজি, মিশকাত)।
ওযুর ফরজ কাকে বলে
ফরজ হলো অবশ্য কর্তব্য। যেটা অবশ্যই পালন করতে হবে তাকে ফরজ বলা হয়। কোন
ব্যক্তি যদি খরচ ছেড়ে দেয় তাহলে সে ফরজ হয়ে যাবে। তেমনি অজুর ফরজ হলো যেটা
অজু করার সময় বাদ করলে অজু হবে না।
তাই আমাদের খুব গুরুত্ব সহকারে ওযুর ওযু করার সময় ওযুর ফরজ গুলো খেয়াল রাখা
উচিত। আর তা না হলে আমাদের ওযু হবে না। আর অজু করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন না
করলে নামাজ আদায় হবে না।
ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি
আমরা সকলে পূর্বে পড়ার মাধ্যমে জানতে পারলাম ওযুর ফরজ কাকে বলে। এখন আমরা
জানবো অজুর ফরজ কয়টি ও কি কি। আর এর মধ্যে থেকে একটি বাদ গেলে আমাদের অজু হবে
না। চলুন তাহলে ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি জেনে নেওয়া যাক।
ওযুর ফরজ হলো মোট ৪টি। ওযুর ফরজগুলো হলোঃ
- সমস্ত মুখোমন্ডল ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দ্বারা ধৌত করা। ( আমাদের কপালের উপরিভাগের চুলের গোড়া হইতে মুখের থুতনি পর্যন্ত এবং কানের লতি পর্যন্ত )
- দুই হাতে দুই কোনই ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দ্বারা ধৌত করা। এমনভাবে ধৌত করতে হবে যেন কোথাও পানি পৌঁছাতে বাদ না পড়ে।
- মাথার চার ভাগের একভাগ ভালোভাবে মাসেও করা।
- দুই পায়ের টাকনো গিরা সহ ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দ্বারা ধৌত করা।
ওযুর সুন্নত কয়টি ও কি কি
আমরাই তো পূর্বে অজুর ফরজ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এখন আমরা জানবো অযুর সুন্নত
কয়টি ও কি কি। ওযু করার ফরজ ব্যতীত যে সকল কাজ রয়েছে এবং যেগুলো দলিল
দ্বারা প্রমাণিত তাকে ওযুর সুন্নত বলা হয়। অজুর সুন্নত পালন করার মাধ্যমে ওযু
সুন্দর হয়।
ওযুর সুন্নত রয়েছে অনেক। তার মধ্যে থেকে কিছু নিম্নে বলা হলো। যেগুলো সকলের
জেনে থাকা উচিত। তাহলে চলুন এখন জেনে নেই অজুর সুন্নতগুলো।
অজুর সুন্নত সমূহ হলোঃ
- ওযু করার পূর্বে মেসওয়াক করা
- ওযু করার পূর্বে অবশ্যই ওজুর নিয়ত করা
- "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বলে অজু শুরু করা
- উভয় হাতের কব্জি তিনবার ধৌত করা
- হাতের কব্জি ধোতে সময় হাতের আঙ্গুলি গুলো খিলাল করা
- তিনবার ভালোভাবে গড়গড়া সহ কুলি করা। ( রোজা রাখা ব্যতীত)
- নাকে তিনবার পানি দেওয়া। এবং হাতের বৃদ্ধা এবং কনিষ্ঠা আঙ্গুলি দ্বারা নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো। ( অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন কোনোভাবেই পানি তেমনভাবে শরীরে না পৌঁছায় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে)
- তিনবার পুরো মুখোমন্ডল ভালোভাবে ধৌত করা। এবং মুখে ঘন দাড়ি থাকলে হাতের আঙ্গুলি দ্বারা খিলাল করা।
- দুই হাতের কোনইসহ ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দ্বারা ধৌত করা। এমনভাবে ধৌত করা যেন কোথাও কোন জায়গা ফাঁকা না থাকে।
- ওযু করার সময় সব সময় ডান অঙ্গ আগে ধৌত করা।
- সমস্ত মাথা তিন ভাগের একভাগ মাসেহ করা। এবং এটি একবার অথবা তিনবার করতে পারেন।
- দুই পা টাখনু পরিমাণ ভালোভাবে তিনবার ধৌত করা।
- পা ধৌত করার সময় পায়ের আঙ্গুলি গুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্য হাতের আঙ্গুলে তারা খিলাল করা।
- এবং ওযুর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ভালোভাবে ওযুর কাজগুলো সম্পূর্ন করা।
- অজুর আগে এবং পরে ওযুর দোয়া পড়া।
- এবং ওযুর করার শেষে দুই রাকাত "তাহিয়্যাতুল ওযু" নামাজ পড়া।
অযুর মুস্তাহাব কয়টি ও কি কি
আমরা সকলেই জানি নামাজ আদায় করার জন্য অজু করা ফরজ। আমরা সকলে অজুর ফরজ ওযুর
সুন্নত ওযুর ওয়াজিব সম্পর্কে জানি। কিন্তু আমরা ওজন মুস্তাহাব সম্পর্কে
জানিনা। ওযুর মোস্তফা হল ওজুর সাথে সংশ্লিষ্ট এমন কিছু কাজ যেগুলো না আদায়
করলেও অজু হবে।
আপনি যদি ওযুর মুস্তাহাব সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে এখনি জেনে নিন। চলুন
তাহলে এখন ওযুর মুস্তাক সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। ওযুর মুস্তাহাব সম্পর্কে
অনেক আলেমগণ অনেক কথা বলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন ওজুর মুস্তাহাব ১৭ টি।
আবার কেউ কেউ বলেছেন অজুর মোস্তাহাব ২৬ টি। আবার কেউ কেউ এমনও বলেছেন যে ওযুর
মুস্তাহাব মূলত পাঁচটি। আমরা এখন জানবো ওজন মুস্তাহাব সম্পর্কে।
অযুর মুস্তাহাবগুলো হলোঃ
- ওযু করার সময় পানি প্রবাহিত হওয়ার জায়গা থেকে একটু উঁচু জায়গায় বসে ওজু করা।
- ওযু করার সময় কেবলামুখী হয়ে বসা।
- ওযু করার সময় যে পাত্রটিতে পানি থাকবে সে পাত্রটি বাম দিকে রেখে ওযু করা।
- একজন সুস্থ ব্যক্তির জন্য নিয়ম হচ্ছে নামাজের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগেই অজু করা।
- শরীরের যে কোন অঙ্গের ডান দিক থেকে অজু শুরু করা।
- ওযু করার সময় সমস্ত অঙ্গ ধৌত করার পূর্বে "বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম" পড়া
- প্রয়োজন ছাড়া অন্য কারো সাহায্য না নেওয়া
- হাত ধৌত করার সময় হাতের আঙ্গুলে আংটি থাকলে তা খুলে ওযু করা।
- ডান হাত দ্বারা কুলি করা।
- মুখমন্ডল ধৌত করার সময় দুই হাত দ্বারা ধৌত করা
- ডান হাত দ্বারা নাকে পানি দেওয়া। আর বাম হাত দিয়ে নাক পরিষ্কার করা।
- ওযু করার সময় শরীরের অঙ্গ ধৌত করার সময় হাদিসে বর্ণিত দোয়া পাঠ করা।
- হাতের আঙ্গুরের উল্টো পিঠ দিয়ে ঘাড় মাসেও করা
- শরীরের প্রতিটি অঙ্গ ঘষে মেজে পরিষ্কার করে ধৌত করা
- ওযু করার সময় দুই পা বাম হাত দ্বারা ধৌত করা
- ওযু করা শেষে হাত ঝাঁকি না দেওয়া। কারো এর মাধ্যমে শয়তানের জন্য পাখায় পরিণত করা হয়
- মাকরুহ না হলে ওজু করা শেষে দুই রাকাত "তাহিয়্যাতুল ওযু" এর নফল নামাজ পড়া
- ওযু করার সময় কোনরকম কথাবার্তা না বলা।
- ওজু করার পরে কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করা
ওজু করার সঠিক নিয়ম
প্রত্যেক নামাজে মুসলিম ব্যক্তির জন্য নামাজ পড়ার পূর্বে অজু করা ফরজ। কেননা
ওযু ছাড়া নামাজ আদায় হয় না। আর ওজন মাধ্যমে আমাদের শরীরের পবিত্রতা অর্জন
করা হয়। অজু করার নিয়ম কানুন রয়েছে।
আপনি যদি অজু করার সঠিক নিয়ম জেনে না থাকেন তাহলে এখনি আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়ে ওযু করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। তাহলে চলুন এখন জেনে
নেওয়া যাক ওজু করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে।
- প্রথমে ওযুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনের জন্য মনে মনে নিয়ত করা
- উভয় হাতের কব্জি তিনবার করে সম্পূর্ণ রূপে ভালোভাবে ধৌত করা। প্রথমে ডান হাত থেকে শুরু করা তারপরে বাম হাত ধৌত করা।
- ডান হাতে পানি নিয়ে তিনবার করে গড়গড়া সহ কুলি করা। তবে মনে রাখতে হবে রোজা থাকা অবস্থায় গড়গড়া কুলি না করা।
- ডান হাত দিয়ে নাকে প্রবেশ করানো এবং বাম হাত দিয়ে নাক পরিষ্কার করা। এবং তিনবার করে নাকে পানি দেওয়া সুন্নত। তবে রোজাদার ব্যক্তি ব্যতীত নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি না পৌঁছানো উত্তম।
- দুই হাত দ্বারা মুখমন্ডল ধোয়া। উল্লেখ্য যে কপালের উপরে চুলের গোড়ালি হতে দুই কানের লতি পর্যন্ত পরিষ্কার ভাবে ধৌত করা।
- মুখে ঘন চাপা দাড়ি থাকলে তা আঙ্গুলের মাধ্যমে খিলাল করা। মুখের দাড়ি হাতের আঙ্গুলি দ্বারা খিলাল করা সুন্নত।
- দুটি হাত কোনুই সহ ভালোভাবে ধৌত করা। হাত ধোয়ার সময় হাতের আঙ্গুলি গুলো খিলাল করা যাতে প্রত্যেকটি কোণায় পানি পৌঁছায়। আর এমন ভাবে ধৌত করা যেন কোথাও কোন ফাক না থাকে। একবার হাত ধোয়া ফরজ আর তিনবার হাত ধোয়া সুন্নত।
- মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা। সমস্ত মাথা সম্পূর্ণরূপে মাসেহ করা সুন্নত।
- বাম হাত দিয়ে ঘষে ঘষে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ধৌত করা।
- এবং অজু শেষে কালেমায়ে শাহাদাত পড়া। ওজুর শেষে কালেমায়ে শাহাদাত করা মুস্তাহাব।
মন্তব্য
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুক। সকলে
যেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সফলভাবে আদায় করতে পারি। এবং সকলে ওযুর বিষয়টি খেয়াল
রেখে অজু করবেন।
আজকে আমাদের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল অজু করার সুন্নত তরিকা পুরুষদের এবং
মহিলাদের ওযু করার নিয়ম। আশা করছি আপনি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
পড়েছেন। এবং আপনি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে ওযু করার সুন্নত তরিকা
পুরুষদের এবং মহিলাদের ওযু করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
পুরো আর্টিকেলে কোথাও কোন ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকলে সেটা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে
দেখবেন। এবং কোথায় ভুল হয়েছে সেটা অবশ্যই মন্তব্য করার মাধ্যমে জানিয়ে
দিবেন। ধন্যবাদ।
Post a Comment