গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতাপ্রিয় পাঠক, আমাদের বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে এখানে প্রচুর পরিমাণে ধানের চাষ করা হয়। এখানে অনেক আমন ধান ও চাষ করা হয়। আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৩ সম্পর্কে আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
কারণ আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটিতে আমরা আমন ধানের হাইব্রিড জাত আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত আলচনা করবো।
বর্ষা মৌসুমের জন্য আমন ধান অনেক উচ্চ ফলনশীল একটি ধান। এই ধান বর্ষাকালে বৃষ্টির পানির সাথে পাল্লা দিয়ে বেরে উঠে। তাহলে চলুন এখন আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৩ বিস্তারিত আলচনায় যাওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৪
ভূমিকা
ধান চাষের ক্ষেত্রে আমাদের দেষের কৃষকগণেরা এখন আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন। এখন তারা জানেন যে কোন মৌসুমে কোন ধান লাগালে বেশি ফলন পাওয়া যাবে। আর বেশি ফলন পেতে তারা সবসময় কৃষিকর্মকর্তার নিকট থেকে তথ্য নিয়ে চাষ করেন।
যার ফলে তারা দিন দিন সফলতার সিড়ি বেয়ে উপরের দিকে উঠছেন। আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগসহকারে পড়েন তাহলে আপনি আমন মৌসুমে ধানের জাত, আমন ধানের উন্নত জাত, আমন ধানের জাত ৮৭, আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।
আমন ধানের হাইব্রিড জাত
বর্ষ মৌসুমের জন্য আমাদের দেশের সকল কৃষোকদের কাছে একটি জনপ্রিয় ধানের জাতের নাম হচ্ছে আমন। এই ধান বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টির পানির সাথে পাল্লা দিয়ে বড় হতে থাকে। ফলে কৃষকদের তাদের ধান ডুবে যাওয়া নিয়ে কোন চিন্তায় থাকতে হয় না।
এই ধানের চাষ এবং ধানের ফলন উন্নত করতে প্রতিনিয়ত গবেষকেরা গবেষণা করে যাচ্ছেন। আমন ধানের হাইব্রিড জাত নিয়ে গবেষণা করে গবেষকেরা কিছু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। যে সকল ধান অনেক উচ্চ ফলন দিতে সক্ষম।
চলুন তাহলে এখন আমরা সেই সকলে ধান সম্পর্কে ধানের জাত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। বিএডিসি হাইব্রিড ধান-২ (উইন ২০৭)ঃ এই ধানের জাত কৃষকদের অনেক সুবিধা প্রদান করবে। গবেষকগণ জানিয়েছেন যে এই ধান অন্যান্য সকল ধানের জাতের চেয়ে ৩০ দিন পেকে যাবে।
এবং তার পাশাপাশি এই ধানের জাতের ফলন হেক্টর প্রতি ৭ - ৭.৫ টন পর্যন্ত দিতে সক্ষম। আর প্রতি বিঘায় ২৫ - ২৮ মণ পর্যন্ত ফলন দিবে।
ব্রি ধান - ৯০ঃ এই ধান ও অনেক উচ্চ ফলনশীল। যেটা কৃষকদের জন্য অনেক সুবিধা বয়ে নিয়ে আসবে। এই ধানের হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৫.০ টন দিতে সক্ষম। এই ধানের জীবনকাল অন্যান্য ধানের থেকে অনেকটাই কম ১১৭ দিন।
এই ধানের একটি পূর্ণবয়ষ্ক গাছের গড় উচ্চতা হয়ে থাকে প্রায় ১১০ সেমি। এই ধানের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এই ধান উচ্চ মাত্রার প্রটিন সমৃদ্ধ।
ব্রি ধান৯১ঃ এই ধানের গড় উচ্চতা হয়ে থাকে প্রায় ১৮০ সেমি। যার কারণে গছটি সহজেই হেলে পরে যায় না। এই জাত পানির সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেতে পারে।
এই ধানের জীবনকাল ১৫৬ দিন হয়ে থাকে। যা অন্যান্য সকল ধানের থেকে ১০-১৫ দিন আগেই উঠে আসে। এই ধানের জাত প্রায় প্রতি হেক্টরে গড়ে ৬.৪ টন ফলন দিতে সক্ষম।
ব্রি ধান৯২ঃ এই জাতটি একটি মূলত পানি সাশ্রয়ী জাত। এই ধানের জাতের চাষ অনেক কম পানি ব্যাবহার করেও ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব। এই ধানের জীবনকাল ১৫৬-১৬০ দিন। এই ধান প্রতি হেক্টরে প্রায় ৮.৪ টন গড় ফলন দিতে সক্ষম।
এছাড়া যদি এর উপযুক্ত পরিচর্যা করা হয় তাহলে এই ধানের যাত ৯.৩ টন ফলন প্রতি হেক্টরে দিতে সক্ষম একটি জাত।
আমন মৌসুমে ধানের জাত
আমন মৌসুমে অনেক ধরণের আমন ধানের জাতের চাষ করা হয়। কিন্তু আমরা সকলেই এই ধানের জাতের নাম সম্পর্কে জানি না। আর জেনে থাকলেও হাতে গোনা কয়েকটি জাতের নাম আমরা জানি। আপনিও যদি এমন আমন ধানের জাতের কয়েকটা নাম জেনে থেকে থাকেন তাহলে এখনই আরো অনেক ধানের জাতের নাম জেনে নিন চলুন তাহলে।
- ব্রি ধান ৭১
- বিনা ধান ১৭
- ব্রি ধান ৮৭
- বিআর৩ (বিপ্লব)
- বিআর৯ (সুফলা)
- বিআর১৪ (গাজী)
- বিআর১৭ (হাসি)
- বিআর২১ (নিয়ামত)
- বিআর২৬ (শ্রাবণী)
- বিআর২৩ (দিশারী)
- ব্রি হাইব্রিড ধান১
- ব্রি হাইব্রিড ধান ২
- ব্রি হাইব্রিড ধান ৩
- ব্রি ধান১০৬
- বিআর৮ (আশা)
আমন ধানের উন্নত জাত
আমন ধানের জন্য কিছু উন্নত জাত রয়েছে। যেগুলি সম্পর্কে আমাদের সকলের জেনে রাখা উচিত। কারণ একটি উন্নত জাতই পারে সর্বচ্চ ফলন দিতে। আর তাই আমাদের সকলেই এই সকল ধানের জাত সম্পর্কে অবগত থাকা উচিত।
এই বিষয়ে আপনি আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন নিচের এই আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৩ টপিকে। তাহলে চলুন এখন আমরা সকলেই আমন ধানের উন্নত জাতগুলি জেনে নেই। বাংলাদেশের কৃষি নিয়ে গবেষণা করা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রায় বেশ কিছু আমন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।
যেগুলি ধানের জাত অনেক উচ্চফলনশীল। এবং খুব অল্প সময়েই এই ধান ঘরে তুলা যাবে। যেই সকল ধানের জাত গুলি হলোঃ
- ব্রি ধান ৫৬
- ব্রি ধান৫৭
- ব্রি ধান৬২
- ব্রি ধান৬৬
- ব্রি ধান ৭১
- ব্রি ধান ৭৩
- ব্রি ধান ৭৫
- ব্রি ধান ৮৭
- ব্রি ধান ৯০
- ব্রি ধান ৯৫
- ব্রি হাইব্রিড ধান ৪
- ব্রি হাইব্রিড ধান ৬
- বিনাধান-৭
- বিনাধান-১১
- বিনাধান-১৫
- বিনাধান-১৬
- ব্রি ধান ৭১
- বিনাধান-১৭
- বিনাধান-২২
- বিনাধান-২৩
আমন ধান রোপনের সময়
আমন ধান সাধারণত শীতের সময়েই চাষ করা হয়ে থাকে। বর্ষার মৌসুমের যখন পানি উঠতে শুরু করে জমিতে জমিতে। তখন আমন ধান রোপন করা হয়ে থাকে। আর এই ধান রোপনের কিছুদিন পরে থেকেই জমিতে জমিতে পানিতে টইটম্বুর হয়ে যায়।
আর তখন এই ধান বর্ষার পানির সাথে পাল্লা দিয়ে বড় হতে থাকে। আমন ধানকে অনেকে Winter rice ও বলে থাকে। কারণ এই ধান শীতের সময় হয়ে থাকে। এই ধান রোপনে উপযুক্ত সময় হচ্ছে June - July মাস।
বোরো ধান কাটার পর পরই এই ধান রোপন করা হয়। আর এই ধান সাধারণত কেটে ফেলা হয় October - November মাসে। এই সময়ে শীত প্রায় অনেকটাই থাকে।
আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৩
আমন ধানের অনেক জাত রয়েছে। যেগুলি মৌসুমি সময়ে চাষ করা হয়ে থাকে। এই ধান ব্রি কতৃক উদ্ভাবন করা শুরু হয় ১৯৭০ সালের দিকে। তখন থেকে এই এখন পর্যন্ত নিয়োমিত এই ধান উদ্ভাবন করা হচ্ছে। যাতে কৃষকদের ধান চাষে অনেক সুবিধা হয়।
তারা ধান চাষ করে যেন অনেক লাভবান হতে পারেন। আপনি যদি একজন কৃষক হিসেবে ধান চাষ করার মাধ্যমে লাভবান হতে চান তাহলে আপনি নিম্নের আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৩ এর চার্ট দেখে নিন।
এইটা দেখার মাধ্যমে আপনি কোন ধান কি পরিমাণ ফলন দেয় সেটা বুঝতে পারবেন। আর সেই ধান চাষ করার মাধ্যমে আপনি লাভবান ও হতে পারবেন।
ব্রি কতৃক উদ্ভাবিত কিছু আমন ধানের জাত উল্লেখ করা হলো। যেইগুলি জাত অনেক উচ্চফলনশীল। তাহলে চলুন এখন সেগুলি জেনে নেওয়া যাক।
এছাড়াও অনেক আমন ধানের জাত রয়েছে। আপনি যদি সেইগুলি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এইখানে ক্লিক করুন।
আমন ধানের জাত ৮৭
আমাদের দেশের প্রায় সকল কৃষকগণই আমন ধানের জাত ৮৭ কেই অনেক পছন্দ করে থাকেন। তার করণ হিসেবে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন এই ধান অন্য সকল আমন ধানে থেকে বেশি পরিমাণে ফলন দিতে পারে। আপনি যদি আমন ধানের জাত ৮৭ সম্পর্কে জেনে না থেকে থাকেন তাওলে এখনি জেনে নেই চলুন।
আমন ধানের জাত ৮৭ এর কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে। সেগুলি হলোঃ
- এই গাছ খুব সহজেই ঢলে পরে যায় না।
- একটি প্রাপ্ত বয়ষ্ক গাছের উচ্চতা ১২২ সেমি এর বেশি হয় না।
- পাতা হালকা সবুজ থাকে। এবং এর মাঝের পাতা অর্থাৎ দিগ পাতা খারা হয়।
- ধান অনেক লম্বা হয় বিধায় চাল ও লম্বা হয়।
- প্রতি ১০০০ টি পরিপক্ক ধানের ওজন প্রায় ২৪.০৫ গ্রাম হয়ে থাকে।
- এই ধানের জীবনকাল ১২৭ দিন হয়ে থাকে।
- এই ধান প্রতি হেক্টরে প্রায় ৬.৫ টন থেকে ৭.২ টন ফলন দিতে সক্ষম।
সর্বশেষ বক্তব্য
আজকে আমদের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো আমন ধানের জাত সমূহ ২০২৩ সম্পর্কে। আশা করছি আপনি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।
এই রকম তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন নিয়োমিত পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আর হ্যা, আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Post a Comment