অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট (JSC, SSC, HSC)

বঙ্গবন্ধু টানেল রচনাপ্রিয় পাঠক, অধ্যবসায় রচনা কি আপনি জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করবো। এছাড়াও অধ্যাবসায় এর আরো কিছু পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করবো। তো বন্ধুগণ চলুন আর বেশি দেরি না করে অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট এর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো জেনে নেওয়া যাক।
অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট
অধ্যবসায় রচনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা। এই রচনা পরিক্ষায় আসার অনেক বেশিই সম্ভাবনা থাকে। তবে আপনি যদি পরিক্ষার খাতায় অধ্যবসায় রচনা লিখে ভালো মার্ক পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট লিখতে হবে। কোন সকল পয়েন্টগুলো লিখবেন চলুন জেনে নেই।

পেজ সূচিপত্রঃ অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট (JSC, SSC, HSC)

অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট

অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট নিয়ে আজকের এই পাঠের মধ্যে আমরা একটু পরেই জানবো। এই রচনা JSC, SSC, HSC সকল শ্রেণিয় শিক্ষার্থীর জন্যই কাজে আসবে। যেহেতু এই রচনা অনেকটাই ইম্পোর্টেন্ট তাই আমাদেরকে এই রচনা জেনে রাখা উচিত। কারণ এই বছরে এই রচনে পরিক্ষাতে আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি রয়েছে। তাহলে চলুন আর বেশি দেরি না করে আমরা সকলেই অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট (JSC, SSC, HSC) জেনে নেই।

ভূমিকা

অধ্যাবসায় হলো মানুষের জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি নির্দিচ্ছন্ন প্রচেষ্টা। এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে অনেকে সফলতা অর্জন করতে পারেন। তবে আমাদের মধ্যে কেউ ব্যর্থ হতে পছন্দ করেন না। সকলেরই চিন্তা-ভাবনা থাকে সফল হওয়ার জন্য। তবে সকল মানুষের সব সময় সফল হতে পারে না। সফল হওয়ার জন্য আপনার জীবনে বারবার ব্যর্থতা নেমে আসবে। তারপরও আপনাকে ব্যর্থতাকে দোষ না দিয়ে সফল হওয়ার জন্য কঠিন অধ্যাবসায় চালিয়ে যেতে হবে।
“জীবনের প্রতি অধ্যায়, চাই দৃঢ় প্রত্যয়,
চাই ঘাত–প্রতিঘাত, লৌহ কঠিন সত্য হৃদয়।”

কবিতার এই সারাংশটির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অধ্যবসায়ের মূল বক্তব্য। এই বক্তব্যটি করেন মূলত বিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিস। এই অনুচ্ছেদের মাধ্যমে মাধ্যমে একটাই সম্ভাবনা জানতে পারা যায় সেটি হল জীবনে সফল হওয়ার জন্য সবথেকে বড় হাতিয়ার হল অধ্যবসায়। আর এটি হতে পারে একটি মানুষের মহৎ গুণ। আর এই কঠিন অধ্যবসায় এর জন্যই অনেক মানুষজন সফলতার শিখরে পৌঁছেছেন।

আমাদের সকলের জীবনে কিছু কিছু আলাদা লক্ষ রয়েছে। আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য মানুষজন তার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করতে থাকে। তারপরেও এমন অনেকে রয়েছেন জিনারা তাদের সর্বোচ্চ বিলিয়ে দেওয়ার পরেও সফলতার শিখরে পৌঁছতে সক্ষম হয়নি। তারপরেও তারা কঠিন অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে তাদের সফলতাকে ছিনিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছেন।

যদি সঠিকভাবে বলা যায় তাহলে অধ্যাবসাইকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যায় যে মানব জীবনের সকল লক্ষ্য গুলো অর্জনের জন্য সকল প্রকারের ব্যর্থতা ঘাত প্রতিঘাত দীর্ঘ প্রচেষ্টা এবং ধৈর্য ধারণ করার নামই হচ্ছে অধ্যবসায়। অধ্যবসায় ছাড়া পৃথিবীর কোন কাজ সাধিত করা সম্ভব নয়।

অধ্যবসায় কি

অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট এর মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। ভুলেও এটিকে কোনভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অধ্যাবসায় বলতে মূলত বোঝানো হয় অবিরাম প্রচেষ্টাকে। আপনি যদি এমন কোন ব্যক্তিকে দেখেন যে তার গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তাহলে বুঝে নিবেন সেটি হল তার অধ্যবসায়। জীবনে আপনি যতই ভালো কিছু পাওয়ার চেষ্টা করেন না কেন সেটা খুব সহজে পাবেন না। তার জন্য প্রয়োজন হবে কঠিন অধ্যাবসায়ের।
অধ্যবসায় কি
ডা. লুৎফর রহমান বলেছেন কৃতকার্যতার জন্যে বারবার চেষ্ঠা করার নাম হল অধ্যবসায়। তিনি আরো বলেন,
"সাধনার কোনো কোনো ব্যাপারে যদি প্রথমবারে ব্যর্থ মনোরথ হও,
তবে তড়িৎ যেওনা–বারেবারে আঘাত কর, দুয়ার ভেঙে যাবে।"

অর্থাৎ এই উক্তিটির মাধ্যমে এমনটি বোঝানো হয় আপনি যদি সহজে সফলতা না পান তাহলে তার জন্য কোন ভাবে তার বিমুখ হওয়া যাবে না। বারবার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই দেখবেন একদিন সফলতা হাতে ধরা দিয়েছে। এই হিসেবে ইংরেজিতে একটি কথা রয়েছে Try again and again যার অর্থ দাঁড়ায় এই যে চেষ্টা করো বারবার চেষ্টা করো। আর একই বলা হয় মূলত অধ্যবসায়।

সফলতা অর্জনের ক্ষেত্রে যে যত বেশি ধৈর্য ধারণ করে তার কাজের প্রতি মনোনিবেশ দিতে পারবে সে ততো বেশি সফলতার পথে এগিয়ে যাবে। অধ্যাবসায় কি মূলত বলা হয়ে থাকে মানসিক শক্তি অথবা বল। এই সফলতার পথে যতপ্রকারী বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন অধ্যবসায়িকৃত ব্যক্তি সকল প্রকারের বাধা-বিপত্তিকে পার করতে সক্ষম হয়। যার মধ্যে যত বেশি মানসিক শক্তি দীপ্তমান সে তত বেশি অধ্যবসায়ী।

এ প্রসঙ্গে কালীপ্রসন্ন ঘোষ বলেছেন,
পারিব না এই কথাটি বলিও না আর,
একবার না পারিলে দেখ শতবার।

আপনি যদি মানব জীবনে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে সব থেকে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো আপনার অধ্যবসায়। এই অধ্যাবসায়ের মাধ্যমেই মহৎ কিছু অর্জন করা সম্ভব। অনেকে এমনটি মনে করেন সফলতার মূল চাবিকাঠিই হচ্ছে অধ্যবসায়। আপনি পৃথিবীর যতগুলো সুন্দর এবং আকর্ষণীয় জিনিস গুলো দেখেন না কেন এই সকল কিছু একদিনে অর্জন করা সম্ভব হয়নি।

এর জন্য প্রয়োজন প্রয়োজন হয়েছে অধ্যবসায়ের। জীবনে চলার পথে অনেক ধরনের বাধা-বিপতি আসবেই আর এটাই হল স্বাভাবিক একটি কাজ। তবে যারা সকল প্রকারের বাধা-বিপদ থেকে পেরিয়ে তার নিজের লক্ষ্যের দিকে অটুট থাকবে তারাই তাদের সফলতার দিকে হবে জয়ী। পৃথিবীর যত প্রকার ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন, যতগুলো বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিক রয়েছেন সকলের সফলতার পেছনের মূল গল্পই হলো অধ্যবসায়।

অধ্যবসায়ের গুরুত্ব

জীবনে সফলকাম হওয়ার জন্য অধ্যবসায়ের কোন তুলনা নেই। এই প্রসঙ্গে কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন,
কেন পান্থ ক্ষান্ত হও, ভেরি দীর্ঘ পথ
উদ্যম বিহনে কার পুরো মনোরথ?

এই উক্তিটির মাধ্যমে বোঝা যায় যে মানুষের জীবনের সাথে যেমন সময় জড়িত রয়েছে তেমনি তার জীবনের সাথে জড়িয়ে রয়েছে তার সকল কর্ম। তবে যদি ভাল এবং উত্তম কর্মর জন্য প্রচেষ্টা করেন তবে তার জন্য প্রয়োজন হবে অধ্যাবসায়ের। আর এই অধ্যবসাইকেই বলা হয়ে থাকে মানব জীবনের মূল প্রেরণা এবং সফলতার মূল চাবিকাঠি। সংগ্রামে যেমন জয় রয়েছে তেমনি এর বিপরীতে পরাজয় রয়েছে।

তবে যখন পরাজয় হয়ে যাবেন তখন এটি শেষ নয়। পরাজয়কে বলা হয়ে থাকে নতুন জয়ের জন্য একটি অগ্রিম ধাপ। এই ধাপ অনেকেই অতিক্রম করতে না পেরে হেরে যায়। আর যারা হেরে না গিয়ে উদ্যমে আবার নতুন করে শুরু করে তারাই হয় সফল ব্যক্তি। এই সম্পর্কে স্যামুয়েল জনসন বলেন,

“সবচেয়ে কঠিন কাজ শক্তি দিয়ে নয় বরং অধ্যবসায়ের দ্বারা সম্পাদিত হয় সফলতা।”

অধ্যাবসায় সম্পর্কে ইংরেজিতে একটি প্রবাদ বাক্য রয়েছে Failure is the pillar of success। যার অর্থ হলো যদি ব্যর্থ না হও তাহলে সফলতার মর্ম বুঝতে পারবে না। তাই যখন একবার অকৃতকার্য হবেন তার পরে হতাশ না হয়ে আবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করতে হবে। হতাশ হয়ে যদি হাল ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে এটি হবে সবথেকে বোকামির একটি কাজ।

অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা

ব্যক্তি জীবনে অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে অনেক। আর এর ফলে অধ্যবসায়কেই মূলত সফলতা চাবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করা হলো এর মূল লক্ষ্য। সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে সকল প্রকার বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে ওঠে পথকে আরো সহজ করার জন্য প্রয়োজন রয়েছে অধ্যাবসায়ের। অধ্যবসায় সম্পর্কে একটি বাক্য সর্বাধিক প্রচলিত রয়েছে। সেটি হলো
"একবার না পারিলে দেখো শতবার
পারিবনা বলে মুখ করিও না ভার।"

অধ্যাবসায়ের মূল লক্ষ্য থাকে না পারার কাজকে সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। পারতেই হবে এরুপ ধরনের মনোভাব নিয়ে কাজের প্রতি মনোনিবেশ করা। যদি এমন মনোভাব নিয়েই কাজের প্রতি মনোনিবেশ করা যায় তাহলেই প্রকৃতপক্ষে মূল লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। অন্যথায় এটি বিঘ্নিত হবে। অধ্যাবসায়ের ফলে মূলত মানুষ ব্যক্তি জীবনে উন্নত করতে সম্ভব হয়।

মানুষজন সুখ প্রিয়সী। তবে একজন মানুষের জন্য সুখের উপকরণ প্রথম থেকেই তৈরি করে রাখা হয় না। এটি মানুষকে অর্জন করে নিতে হয় তার স্বীয় যোগ্যতার মাধ্যমে। আর এই যোগ্যতা থেকে সুখ অর্জন করার জন্য প্রয়োজন অধ্যবসায়ের। ব্যক্তিজীবনে যেমন অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তেমনি জাতীয় জীবনেও অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

এই অধ্যাবসায় ছাড়া কোন জাতিই উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারবে না। সকল জাতির জন্য মঙ্গল প্রতিষ্ঠার জন্য সামগ্রিকভাবে সকল নাগরিককে অধ্যবসায়ের শিক্ষা নিতে হবে। জীবন নামক যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য সবথেকে প্রথম এবং প্রধান হাতিয়ার হল অধ্যবসায়। যে ব্যক্তি অধ্যাবসায়ের নিকট যত অনুরাগী তার জীবন যুদ্ধ ততটাই সহজ। কেননা তার কাছে অসম্ভব বলে তেমন কোন বাক্যই নেই। আর সেজন্যই হয়তো সম্রাট নেপোলিয়ন বলেছেন,
“Impossible is a word only found in the dictionary of the fools.”
অর্থঃ অসম্ভব শব্দটি কেবলমাত্র বোকার অভিধানেই পাওয়া যায়।

ব্যক্তিজীবনে অধ্যবসায়

ব্যক্তি জীবনে অধ্যাবসায়ের গুরুত্ব রয়েছে অনেক। আমাদের বিশ্বের সকল মানুষের মানসিক শক্তি এবং শারীরিক শক্তি এক নয়। যদিও এই শক্তিগুলো এক নয় তবে সকলকেই কিন্তু উন্নত জীবনধারণের জন্য সন্ধানে যেতে হয়। সেখানে যদি অধ্যবসায় সঠিক যথার্থ প্রয়োগ করা যায় তাহলে তারন সফলতার এবং সাফল্য ছিনিয়ে আনার পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। পৃথিবীর সকল মানুষই খালি হাতে জন্মগ্রহণ করে।
ব্যক্তিজীবনে অধ্যবসায়
কেউ প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। এক্ষেত্রে কারো প্রতিবাদে আগ্রত থাকে এবং এমন কেউ রয়েছে যার প্রতিভার সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। আর যেই ব্যক্তির প্রতিভাষ সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে তার প্রতিভাকে জাগ্রত করার জন্য প্রয়োজন কঠিন অধ্যাবসায়ের। তার সাথে সাথে প্রয়োজন সঠিক এবং কঠোর পরিশ্রমের। তাই শুধুমাত্র আপনার প্রতিভা নিয়েই পড়ে থাকলে চলবে না।

এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যার প্রতিভার রয়েছে কিন্তু তার অধ্যবসায়ের সঠিক মনোভাব নাই আর এর হলে তিনি জীবন যুদ্ধে পরাজিত হতে পারেন। মানব চরিত্রে সকল বনের ভেতর এক উৎকৃষ্ট গুণের নাম হচ্ছে অধ্যবসায়। জীবন যুদ্ধে সকলকে পিছিয়ে ফেলে সঠিকভাবে জয়লাভ করার জন্য প্রয়োজন কঠিন অধ্যবসায়ের। আর এই শক্তিটি হল সকল মানুষের জন্য একটি মহান চারিত্রিক।

যে সকল মানুষ দুর্বল চিত্রের তারা কখনো কঠিন হতে পারেন না। আর এর মূল কারণ হলো তারা কারণে অকারণে সামান্য প্রতিকুল পরিস্থিতিতেই নিজের ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। তবে যদি কোন ব্যক্তি প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে নিজের ধৈর্য হারিয়ে না ফেলে সঠিকভাবে পরিশ্রম করতে থাকেন তাহলে তিনি একদিন না একদিন অবশ্যই সফল হবেন। আর এই কঠিন অধ্যবসায়ী ব্যক্তির জীবনের মধ্যে সফলতা নিয়ে আসে।

ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়

ছাত্র জীবনে অধ্যাবসায়ের গুরুত্ব রয়েছে সর্বাধিক। কারণ আজকের ছাত্ররাই ভবিষ্যৎ জীবনের কর্ণধার। তাদের উপরে নির্ভর করে রয়েছে দেশ এবং বর্তমান জাতির গৌরব। একজন ছাত্র অনেক চেষ্টার ফলে দুবারেও কৃতকার্য নাও হতে পারে। এতে করে তার হতাশ হয়ে গেলে চলবে না। এর ফলে তাকে মনে রাখতে হবে সৎ শ্রম কখনো বৃথা যায় না। আর এটি ভেবেই তাকে কাজের দিকে এগোতে হবে।

কারণ একটি অধ্যাবসায়ই পারে একজন মানুষের সকল ব্যর্থতার গ্লানি মুছে দিতে। আর এরই সাথে সাথে তাকে নিয়ে যেতে পারে জীবনের সর্বোচ্চ কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের পথে। আর তাই একজন ছাত্রের সবথেকে বেশি অধ্যাবসায়ী হওয়া উচিত। যদি একজন ছাত্র সঠিক অধ্যাবসায় না করে তাহলে সে তার জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে কখনোই পৌঁছাতে সম্ভব হবে না।

বারবার ব্যর্থ হওয়ার পরেও তাকে ধৈর্য ধারণ করে অধ্যাবসায় করে যেতে হবে। আর সঠিক অধ্যবসায়ের ফলেই একজন খারাপ ছাত্রও অনেক ভালো ফলাফল করতে পারে। একজন অধ্যাবসায়ী শিক্ষার্থী খুবই স্বল্প পরিমাণ মেয়েরা সম্পূর্ণ হলেও সে সফলতা সক্ষম হবে কেননা তার সঠিক অধ্যবসায় রয়েছে।

মানব সভ্যতাই অধ্যবসায়

আজকে আমরা আমাদের আশেপাশের যে সকল আধুনিক জগত দেখতে পাচ্ছি এই আধুনিক জগত আমাদের পূর্ব পুরুষদের কঠিন অধ্যবসায়ের ফল। যেটা আমরা এখন উপভোগ করতে পারছি। প্রাচীন যুগের মানুষরা বন জঙ্গলের সকল গুহায় এবং উঁচু উঁচু গাছে বসবাস করত। সেই সময়টাতে কোন প্রকার সমাজ, রাষ্ট্র এবং নিজস্ব ভাষা বলতে কিছুই ছিল না। সেই সময় থেকে মানুষজনের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে আস্তে আস্তে বর্তমান মানব সভ্যতার মধ্যে উন্নতি ঘটেছে।

একসময় মানুষজন যেটা স্বপ্নে কল্পনা করতো এখন সেটা বাস্তবে রূপ পেয়েছে। যুগ যুগ ধরে মনীষীদের কঠিন অধ্যাবসায়ের ফলে এবং সকল জ্ঞানের সমন্বয়ে বিশ্ব আজ আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে। আর এই আধুনিকতার ছোঁয়ার ফলে সম্পূর্ণ বিশ্ব এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। বর্তমান সময়ে আমরা যে মানব সভ্যতার উন্নতি দেখতে পাচ্ছি এই উন্নতি খুব একটা সহজ ছিল না।

আদিকাল থেকে মানুষদের অবিরাম প্রচেষ্টা এবং কঠিন অধ্যাবসায়ের ফলে বর্তমানে অত্যাধুনিক মানব সমাজে আমরা বসবাস করছি। যার ফলে আমরা এত সুন্দর একটা জীবন উপভোগ করতে পারছি। যদি না তারা কঠিন অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে বর্তমান বর্তমান পৃথিবীর রূপ দিতেন তাহলে আমরা এই জগত দেখতে পারতাম না। এই উন্নত সভ্যতা আমরা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পারতাম না।

মনীষীদের জীবনে অধ্যবসায়

বিশ্ব জগতে যারা মানুষের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য যাদেরকে মানুষ আদর্শ হিসেবে মানে তারা হলেন মনীষী। আর এই মনীষীরা তাদের কঠিন অধ্যাবসায়ের মাধ্যমেই আজকের এই জগত আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন। এরই উদাহরণ হিসেবে মহাকবি ফেরদৌসীর অমর মহাকাব্য 'শাহানামা' কে ধরা যায়। তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর সাধনার ফলে এই কাব্যপ্রয়াস করেছিলেন।

তেমনি আরও একটি উদাহরণ হল "জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাশ" এর রচিত 'বাংলা ভাষার অভিধান'। তিনি এটিকে দীর্ঘ 20 বছর সাধনার ফলে রচনা করতে সম্ভবপর হন। আবার অপরদিকে আমরা দেখতে পাই প্রাতিষ্ঠানিক কোন প্রকার সহায়তা ছাড়াই আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ তার নিজের একক প্রচেষ্টায় প্রায় দুই হাজার প্রাচীন পুরাতন পুথী সংগ্রহ করে খ্যাতনামা অর্জন করেন।

রবার্ট ব্রুস ছিলেন একজন স্কটল্যান্ডের রাজা। তিনি তার রাজ্যের যুদ্ধের জন্য ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ করেন। আর এই যুদ্ধে তিনি পরপর ছয়বারই পরাজিত হন। তারপরেও তিনি হাল ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত তিনি সপ্তম বার যুদ্ধ করে বিজয়ী হন। বিজ্ঞানী নিউটনের কথা আমরা প্রায় সকলেই জানি। বিজ্ঞানে অবদান রাখার জন্য তার স্বীকৃতি অনস্বীকার্য। এর পেছনে তার রয়েছে কঠিন অধ্যবসায় এবং নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রম

অধ্যবসায় সাফল্যের চাবিকাঠি

অধ্যবসায়কে বলা হয়ে থাকে সফলতা অর্জনের এবং স্বপ্ন পূরণের জন্য মূল চাবিকাঠি। যদি একজন ব্যক্তি উন্নত জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান তাহলে তার ক্ষেত্রে অধ্যাবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। সেটা হতে পারে তার শিক্ষা জীবনে তার ব্যক্তি জীবনে। যদি সেই ব্যক্তি সফলতম স্থানে পৌঁছাতে চায় তাহলে তার জন্য অধ্যবসায়ের কোন শেষ নেই। যদি আপনি কঠিন অধ্যাবসায়ের মধ্য দিয়ে না যান তাহলে কোনোভাবেই আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন না। আর তাই বলা হয়ে থাকে অধ্যবসায়ই হচ্ছে সফলতার মূল চাবিকাঠি।

ইসলামে অধ্যবসায়

অধ্যাবসায়ের গুণটিকে যদি আমরা ইসলাম ধর্মের দিকে হিসাব করে তাহলে এটিকে ইসলাম ধর্মের "ঈমান" হিসেবে উল্লেখ করা যায়। ঈমান বলতে এমন একটি গুঞ্জে বোঝানো হয় যেটি আমাদের মহান আল্লাহ তায়ালার উপরে বিশ্বাস করতে এবং নির্ভর করার জন্য গাড ইচ্ছাকে বলা হয়। সকল প্রকার কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলার পরেও আমাদেরকে সফল লক্ষ্য গুলি অর্জনের ক্ষেত্রে আশাবাদী করতে সাহায্য করে। ইসলাম ধর্মে নবীকে এবং তার সাহাবীগণদেরকেও ঈমানের প্রতীক হিসেবে দেখা যায়। যেমন- হযরত মুহাম্মদ (সা.)।

বিজ্ঞানে অধ্যবসায়

পৃথিবীর সমস্ত ক্ষেত্রেই অধ্যবসায়ের গুরুত্ব রয়েছে অপরিসীম। আর এর মধ্যে যদি বিজ্ঞানের কথা বলা হয় তাহলে তাতে এর গুরুত্ব অন্যতম। আমরা যদি প্রতিটি বৈজ্ঞানিকের পেছনে লক্ষ্য করে তাহলে অধ্যাবসায়ের সঠিক দৃষ্টান্ত দেখতে পাবো। আমরা বর্তমানে যে আধুনিক যুগের বিজ্ঞানী প্রযুক্তি ব্যবহার করি এর আবিষ্কার করাটা অতটা সহজ ছিল না। যেটা আমরা বর্তমানে সময়ে এত সহজে ব্যবহার করতে পারছি।

বিজ্ঞানীদের কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞা সফল প্রচেষ্টা এবং অধ্যবসায়ের ফলে বর্তমান বিশ্ব আজ এত উন্নতির ছোঁয়া পেয়েছে। তাই আমরা যদি বিজ্ঞানের দিকে তাকাই তাহলে আমরা অধ্যাবসায়ের সঠিক শিক্ষা দেখতে পাবো। আর এখান থেকেই আমরা অধ্যাবসায়ের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি।

অধ্যবসায়ের শিক্ষা

ব্যক্তিজীবনে ব্যর্থতা আসবেই এটা একটি সাধারণ বিষয়। সফল হওয়ার ক্ষেত্রে যদি ব্যর্থতা না আসে তাহলে আপনি এর মূল স্বাদ গ্রহণ করতে পারবেন না। তাই যতই ব্যর্থতা আসুক না কেন আপনাকে সাফল্যের দিকে ছুটে যেতে হবে। কোন ভাবে পিছপা হওয়া যাবে না। সর্বদা দৃঢ় প্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে। যদি আপনি এভাবে অগ্রসর হতে পারেন তাহলে আপনি জীবনে হতে পারবেন সফলকাম।
অধ্যবসায়ের শিক্ষা
যদি সফল ব্যক্তিদের দিকে এবং উন্নত দেশগুলোর দেখে লক্ষ্য করা যায় তাহলে দেখতে পাওয়া যাবে প্রত্যেকের সফলতার পেছনেই অধ্যাবসায় জড়িত রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে বৈপ্লবী নেলসন ম্যান্ডেলা এই সম্পর্কে বলেন,
The greatest glory in living lies not in never falling,
but in rising every time you fall

অধ্যবসায়হীন ব্যক্তির পরিণাম

যাদের জীবনে অধ্যবসায় নেই তাদের জীবনে ব্যর্থতার পরিপূর্ণ। কোনোভাবেই তারা সফলকাম হতে পারবে না। যে কোন কাজই প্রথম অবস্থায় করতে গেলে তাকে কঠিন মনে হবে। কঠিনকে কাটিয়ে ওঠার জন্য সাহায্য করবে যখন আপনি দৃঢ সংকল্প নিয়ে কাজ করবে। আর এটি হয়ে উঠবে আপনার অধ্যাবসায় এর সংকল্প।

এমন অধ্যাবসায় এর কারণেই সফলতার শীর্ষে বোঝাতে পারবেন। যদি দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কাজে নেওয়া যায় এবং সঠিকভাবে অগ্রসর হওয়া যায় তাহলে হাজার ধরনের বাধা অতিক্রম করা সম্ভব হবে খুব সহজে। যাদের জীবনে অধ্যাবসায় নেই তারা সহজে সফলকাম হতে পারে না। আস্তে আস্তে এদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে শুরু করে। একমাত্র অধ্যাবসায়ের গুণের ফলই একজন মানুষ পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ করতে পারে।

অধ্যবসায়ের মূল্য

সকল ব্যক্তির জীবনেই অধ্যবসায়ের মূল্য রয়েছে অপরিসীম। ভারতীয় দর্শন হতে যদি দেখা যায় তাহলে দেখতে পাব আমাদের দুঃখ যত দুর্দশাই হোক না কেন আমরা তথাপি আমাদের সঠিক জীবন গড়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। যাকে বলে আমরা জীবনের সাথে পাঞ্জা লড়ি। আমাদের বাংলাদেশ হল পৃথিবীর একমাত্র ব-দ্বীপ। এর ফলে প্রতিবছর বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের অথবা ভূমি দাসের কারণে আমাদের সারা দেশ প্রতিবছর বন্যায় তলিয়ে যায়।

তারপরও মানুষজন সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভীত না হয়ে বরং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে মোকাবেলা করে লড়াই করে জীবন অতিবাহিত করছে। আর এটি হল অধ্যাবসায়ের সবথেকে বড় মূল্য দেওয়া। এই লড়াই করার মন-মানসিকতা এবং মূল মন্ত্র তাদের জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছে। এই অক্লান্ত পরিশ্রম এবং কঠিন অধ্যাবসায়ের মাধ্যমেই বর্তমানে বাঙালিরা এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে বীজ বপন করে টিকে রয়েছে।

অধ্যবসায়ের অপব্যবহার

অধ্যাদেশের অপব্যবহার বলতে অধ্যাবসায়ের এমন গুণকে বোঝায় যে সকল গুন অধ্যাবসায়ের জন্য ক্ষতিকারক অথবা অপ্রয়োজনীয়। অধ্যবসায়ের অপব্যবহার বিভিন্ন ভাবে হতে পারে। সেগুলো হলো
  • নিজের লক্ষ্য অর্জন এর জন্য এত বেশি পরিমাণে পরিশ্রমী হওয়া যাতে করে আপনি নিজের ব্যক্তিগত জীবনের এবং নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেওয়া বন্ধ করে দেন।
  • লক্ষ্য অর্জনের জন্য আপনার এত বেশি পরিমনে পরিশ্রম করা যার জন্য আপনি আপনার অন্য সকল সহপাঠী অথবা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেন।
  • এমন একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন যার জন্য এত বেশি পরিমানে মানসিক চাপ অথবা হতাশা অনুভব করতে হয়।
যদি আপনি অধ্যাবসায়ের অপব্যবহার করেন তাহলে এটি হতে পারে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। যদি আপনি এমন মনে করেন যে আপনার অধ্যাবসায়ের অপব্যবহার করা হচ্ছে তাহলে অবশ্যই আপনাকে আবার পুনরায় সঠিকভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। তার পাশাপাশি আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত জীবনের উপর যত্ন নিতে হবে এবং আপনার সহপাঠীদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে।

উপসংহার

জীবনে সফলতা লাভের জন্য অধ্যাবসায়ের কোন শেষ নেই। যে জাতি জীবনে যত বেশি অধ্যাবসায় করবে সে জাতি জীবনে তত বেশি সফলতা লাভ করতে পারবে। তাই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের সবথেকে বেশি উদ্যমই পরিশ্রমী এবং অধ্যাবসায়ী হওয়া উচিত। সকল ধরনের প্রতিকূল পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করেই সামনের দিকে এগিয়ে চলা উচিত। তাহলে একজন ব্যক্তির জীবনের সফলতা ফুটে উঠবে। আর এই গুণ আমাদেরকে ছোটবেলা থেকেই জীবনে ধারণ করা উচিত।

লেখকের মন্তব্য

আজকের এই পাঠে আমরা আলোচনা করেছি অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট নিয়ে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে জেনে পরিক্ষার খাতায় অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট ভালোভাবে লিখে অনেক ভালো পরিমাণে মার্ক নিয়ে আসতে পারবে। যদি পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার অন্যসকল বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই সম্পর্কে যদি আপনাদের কোন মতামত থেকে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পেপারস্পট২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url