টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা - টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক

জ্বর সর্দি কাশির এন্টিবায়োটিক ঔষধের নামপ্রিয় পাঠক, টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা - টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে আমরা প্রায় অনেকেই তেমন একটা জানিনা। তেমনি আপনি ও যদি এমন না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটিতে আমরা টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা - টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক নিয়ে বিস্তারিত আলচনা করবো।
টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা
আপনি যদি অনলাইনে টাইফয়েড সম্পর্কে কিছু সঠিক তথ্য জানতে চান তবে এই পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তো চলুন টাইফয়েডের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা

আপনার কি প্রধান স্বাস্থ্য উদ্বেগ আছে? আপনি কি টাইফয়েডের লক্ষণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে চান? আজকের নিবন্ধে আমরা টাইফয়েডের লক্ষণ ও টাইফয়েডের প্রতিকার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এই নিবন্ধটি মনোযোগ সহকারে পড়লে, আপনি নিম্নলিখিত টাইফয়েড সমস্যাগুলি, টাইফয়েডের লক্ষণগুলি, টাইফয়েডের ক্ষতিকারক দিকগুলি, টাইফয়েড কি চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করতে সক্ষম হবে।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন তাহলে আপনি টাইফয়েডের ক্ষতিকর দিক, টাইফয়েড থেকে বাঁচার উপায়, টাইফয়েড কি ছোঁয়াচে, টাইফয়েড জ্বরে কী খাওয়া উচিত নয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন বেশি দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।

টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা

টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা আমাদের জানা উচিত অবশ্যই। কারণ আমরা অনেকে এখন জানি যে টাইফয়েড হলো অনেক মারাত্মক একটি রোগ। যেটা হলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে আমাদেরকে নিরাময় করতে হবে। তা না হলে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্ট হতে পারে। টাইফয়েড আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক সমস্যা তৈরি করে থাকে। আর যদি আমরা সচেতন ভাবে সমস্যা গুলো নিরাময় না করে থাকি তাহলে টাইফয়েড আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

টাইফয়েডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের টাইফয়েড পরবর্তীতে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেগুলোর মধ্য থেকে কিছু অন্যতম সমস্যা গুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো।
  • মস্তিষ্ক বিকল হতে পারে
  • ক্ষুদ্রান্ত্রে রক্তক্ষরণ হতে পারে
  • ক্ষুদ্রান্ত্রে ক্ষত তৈরি হতে পারে
  • মেনিনযাইটিস দেখা দিতে পারে
  • নিউমনোনিয়া দেখা যেতে পারে
  • পিত্তথলিতে প্রবাহ দেখা দিতে পারে
  • স্নায়ুবিক বিভিন্ন সমস্যার দেখা দিতে পারে
  • মেরুদন্ডে বিভিন্ন সংক্রমণ দেখা দিতে পারে
  • স্মপূর্ণ শরীরের নানান স্থানে ফোরা হতে পারে
  • অস্থি অথবা অস্থি সন্ধিতে ইনফেকশান হতে পারে
  • পেটের পরিপাক্ততন্ত্রে রক্তক্ষরণ দেখা দিতে পারে
উক্ত এই সকল সমস্যা ছাড়াও কিডনিতে কোন বড় ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের টাইফয়েড পরবর্তিতেও একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। না হলে আমাদের এই সকল নানান ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক

টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা এবং টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত অবশ্যই। বর্তমানে চিকিৎসা ব্যাবস্থা অনেক উন্নত হওয়ার জন্য টাইফয়েড জ্বরের জন্য ও এন্টিবায়োটিক প্রতিশেধক ব্যাবস্থা চালু হয়ে গিয়েছে। আমাদের বাংলাদেশ এই জ্বরের আক্রান্ত দেশ হওয়ার জন্য এই রোগ থেকে মুক্তির জন্য চিকিৎসা প্রোটোকল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশে টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসার জন্য কিছু ঔষধ ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। সেগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক
এজিথ্রোমাইসিনঃ এই ডোজটি বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। এটি ব্যাবহার করার ফলে টাইফয়েড এর কোষগুলি খুব সহজেই ধ্বংস হয়ে যায়। এই ডোজটি একজন প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ৫০০ মিলি হারে প্রদান করা হয়ে থাকে ৭ থেকে ১০ দিন।

তবে এর কিছু পার্শপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে আমাদের একটু সচেতন থাকা উচিত। পার্শপ্রতিক্রিয়াগুলো হলো
  • বমি বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে।
  • ডায়রিয়ার মতো হতে পারে।
  • পেটে ব্যাথা সৃষ্টি হতে পারে।
  • লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • শরীরের অ্যালার্জি না থাকলেও অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সিপ্রোফ্লক্সাসিনঃ এটি ও একটি টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় ব্যাবহারকৃত একটি এন্টিবায়োটিক ঔষধ। এই ডোজটি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যাক্তির ব্যাবহারের জন্য প্রতিদিন ৫০০ মিলি করে ১০ থেকে ১৪ দিন ব্যাবহারের জন্য ডাক্তারেরা বলে থাকেন। তবে টাইফয়েড জ্বরের ক্ষেত্রে এই ডোজটি সম্পূর্ণ করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

তবে এই ডোজ ব্যাবহারের ফলে কিছু পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তার আপনার অস্বস্থি ও লাগতে পারে। তাই আমাদেরকে এই বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হলে। যেসকল পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তা হলো
  • বমি বমি ভাব অথবা বমি হতা পারে।
  • ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে মাথা ব্যাথা করতে পারে।
  • মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে।
  • পেটে সবসময় সসস্থি লাগতে পারে।
কো-ট্রাইমক্সাজলঃ টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যার সমাধানের জন্য এটি হলো বাংলাদেশে ব্যাবহারকৃত আরো একটি টাইফয়েড রোগের ঔষধ। যেটা আবার অনেকের কাছে ট্রাইমেথোপ্রিম-সালফামেথক্সাজোল নামেও অনেকের কাছে পরিচিত। এটি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যাক্তির জন্য দিনে 160 মিলি ট্রাইমেথোপ্রিম, 800 মিলি সালফামেথক্সাজোল মিশিয়ে ১০ - ১৪ দিনের দুবার ব্যাবহার করতে হবে।

তবে এই ডোজের ক্ষেত্রেও কিছু পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের ডাক্তারের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখা উচিত। আর এই ডোজের কার্যকর চিকিৎসেবা পাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ ডোজটি পূরণ করা উচিত। যেসকল পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তা হলোঃ
  • বমি বমি অথবা বমি হতে পারে।
  • অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • রক্তে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • লিভারের সমস্যা ও দেখা দিতে পারে।
    তাই আমাদেরকে সকল ডোজ ব্যাবহারের ক্ষেত্রে অনেক সচেতন হওয়া উচিত। আর একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ সবসময় গ্রহণ করা উচিত। আর তা হলে আমরা অনেক বড় বিপদের সম্মুক্ষিন হতে পারি। আশা করছি ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন।

    টাইফয়েড এর লক্ষণ - টাইফয়েড এর পরবর্তী সমস্যা

    টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা মধ্যে রয়েছে এটি সাধারণত একটি পানিবাহিত রোগ। টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়ার নাম সালমোনেলা টাইফি এবং প্যারাটাইফি। টাইফয়েডের জীবাণু শরীরে রক্তের সঙ্গে মিশে গেলে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, গলা ব্যথা, শারীরিক দুর্বলতা, পেটব্যথা, উচ্চ জ্বর (১০৩ থেকে ১০৪° জ্বর হতে পারে), ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ শরীরে অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যাগুলোকে টাইফয়েডের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

    এছাড়া টাইফয়েডের কিছু জটিল লক্ষণ হল পরিপাকতন্ত্র থেকে রক্তক্ষরণ, মেরুদন্ডের সমস্যা, মস্তিষ্কে প্রদাহ, শরীরে ফোড়া, বিভিন্ন পিত্তথলির সমস্যা, নিউমোনিয়া, বিভিন্ন স্নায়বিক সমস্যা, কিডনির বিভিন্ন জটিলতা ইত্যাদি। ডেঙ্গু রোগ আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। গ্রীষ্ম ও বর্ষা আসার পর বৃদ্ধি পায়। 

    এই দুই মৌসুমে জ্বর হলে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের দেশে, যে কোনও রোগের জন্য দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিকের দিকে চলে যাওয়া একটি সাধারণ বিষয়, যার ফলে কোনও রোগের জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়ে ওঠে, তাই কোনও রোগ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত কোনও ওষুধ একা সেবন করা উচিত নয়।

    টাইফয়েডের ক্ষতিকর দিক - টাইফয়েড কি চুল পড়ার কারণ

    টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা এবং টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে জানতে পেরেছি। এখন আমরা সকলেই টাইফয়েডের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। টাইফয়েডের ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিপাকতন্ত্র থেকে রক্তপাত, মেরুদন্ডে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করা, মস্তিষ্কে প্রবাহ সৃষ্টি করা, গল ব্লাডারে সমস্যা সৃষ্টি করা, স্নায়ু ও কিডনিতে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করা ইত্যাদি। টাইফয়েড নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নয়। বয়স, মানুষ যে কোনো বয়সে টাইফয়েড হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে টাইফয়েড শিশুদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে।

    টাইফয়েডের কারণে থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিতে পারে, এছাড়া দীর্ঘদিন টাইফয়েডে ভুগলে চুল পড়ার সমস্যাও হতে পারে। টাইফয়েডের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ রয়েছে যা চুল পড়ার জন্য দায়ী। এছাড়া টাইফাসের কারণে মাথায় ছত্রাকের সংক্রমণ ও খুশকির সৃষ্টি হয়, ফলে অপুষ্টিজনিত রক্তশূন্যতা এবং চুলে ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়, যার ফলে অনিয়ন্ত্রিত চুল পড়ে।

    আর আজ, অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা এবং পুষ্টিকর খাবার খেলে চুল পড়া রোধ করা সম্ভব। তবে টাইফয়েডের পরও চুল যাতে ঘন ও মজবুত থাকে, সে জন্য খাবারের মাধ্যমে চুলকে পর্যাপ্ত পুষ্টি দিতে হবে।

    টাইফয়েড থেকে বাঁচার উপায় - টাইফয়েড হলে কী খাবেন

    টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা জানার পরে টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করা উচিত আমাদের। স্নান বা পান করার জন্য ফুটানো পানি ব্যাবহার করা প্রয়োজন। টাইফয়েড এড়াতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডাবের পানি পান করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে সঞ্চিত জল 24 ঘন্টা পরে দূষিত হয়। ফুটপাত বা রাস্তায় দূষিত খাবার ও পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। একা খান রান্নাঘরের পাত্র পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
    টাইফয়েড থেকে বাঁচার উপায়
    উপরের পদ্ধতিগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে টাইফাস থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। এ ছাড়া টাইফয়েড রোগীদের সুস্থতার জন্য বেশি করে শর্করা যুক্ত খাবার খেতে হবে। কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খেলে খাবারের হজমের উপর কোনো অতিরিক্ত চাপ পড়ে না। এছাড়া এসব খাবারে পুষ্টিগুণ বেশি থাকে।

    বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। শরীরে পুষ্টি জোগাতে পানির সঙ্গে ফলের রস, হার্বাল চা, স্যুপ, ভাতের মাড় খাওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাইফাসের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এ জন্য রাতে তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে। তরল খাবার খেলে শরীর থেকে টক্সিন দ্রুত বের হয়ে যায় এবং শরীর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।
    টাইফয়েড জ্বর কতক্ষণ স্থায়ী হয় - কিভাবে টাইফয়েড জ্বর নিরাময় করা যায়

    টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। আপনি যদি টাইফয়েড আক্রান্ত হন, তাহলে ডাক্তারদের মতে, আপনার অবিলম্বে চিকিৎসার পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না করালে রোগ আরও মারাত্মক হতে পারে এবং জ্বর প্রায় এক সপ্তাহ বা এক মাস শরীরে থাকতে পারে। উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার পরেও জ্বর কমতে অন্তত পাঁচ দিন সময় লাগতে পারে।

    সাধারণত টাইফয়েড বা জ্বরের ক্ষেত্রে শরীরে পানির বড় অভাব হয়। এ সময় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর তরল খাবার খেতে হবে যাতে পানির চাহিদা মেটাতে এবং শরীরে পুষ্টি উপাদান প্রবেশ করতে পারে। এরপর আক্রান্ত অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের জুস, ফলের জুস, স্যুপ, ভাতের মাড় ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। টাইফয়েড আক্রমণের পর জ্বর বেশি হলে শরীর মুছে ফেলাই ভালো। তবে মনে রাখতে হবে টাইফয়েড একটি পানিবাহিত রোগ।

    টাইফয়েড ছোঁয়াচে কিনা

    মনে রাখবেন টাইফয়েড একটি ছোঁয়াচে রোগ। টাইফয়েড সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এমনকি পানির মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। সংক্রমণের পর উচ্চ জ্বর হলে ৪-৫টি শুকনো আঙুর বা কিশমিশ ভিজিয়ে খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, টাইফাস রোগীদের শারীরিক দুর্বলতা কমাতে দুধ ও ডিম অল্প পরিমাণে বারবার খাওয়া যেতে পারে।

    টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম

    টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা এবং টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক এর নাম জানার পরেই আমাদের মনে প্রশ্ন যাগে টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নামগুলো কি কি। টাইফয়েড জ্বরের জন্য কিছু ইনজেকশান রয়েছে। যেটা জ্বর আসার পরবর্তি সময়ে দিয়ে দিলে খুব সহজেই এই জ্বর সেরে উঠে। তাই আমাদের কে সেই সকল ইনজেকশানের নাম সম্পর্কে জানা উচিত। আর সেই সকল ইনজেকশান ব্যাবহার করা উচিত। তাহলে চলুন এখম সেই সকল ইনজেকশানের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

    টাইফিম ভি (Typhim V): টাইফিম ভি নামক টাইফয়েড জ্বরের এই ইনজেকশানটি প্রস্তুতকারি কোম্পানির নাম হলো সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি। এই ভ্যাক্সিন অথবা ইনজেকশানটি হলো একটি পলিস্যাকারাইড ভ্যাকসিন। এই ভ্যাক্সিনটি সালমোনেলা টাইফি দ্বারা তৈরিকৃত টাইফয়েড জ্বরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যাবস্থা গড়ে তোলে।

    এই ভ্যাকসিনটি তে প্রধান দুটি উপাদান দেখা যায়। সেগুলো হলোঃ সালমোনেলা টাইফি Ty2 যা স্ট্রেন থেকে নিষ্কাশিত হয়ে থাকে। এবং Vi পলিস্যাকারাইড রয়েছে। এ ইনজেকশানের ডোজটি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তিকে দেওয়া হয়ে থাকে। আর ২ বছরের বাচ্চা অথবা তার থেকে কিছু বেশি বয়সের শিশুদের জন্য 0.5 মিলি আকারে একটি ডোজ দেওয়া হয়ে থাকে।

    ভ্যাক্সফয়েডঃ ভ্যাক্সফয়েড নামক এই ঔষধটি ও একটি টাইফয়েড জ্বরের প্রতিশেধক ঔষধ। এই ঔষধের প্রস্তুতকারক হলো ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লি.। এটাতেও দুটি উপাদান রয়েছে। যেগুলো হলো সালমোনেলা টাইফি Ty2 যা স্ট্রেন থেকে নিষ্কাশিত হয়। এবং Vi পলিস্যাকারাইড রয়েছে।

    এই ঔষধের ডোজটি একজন প্রাপ্ত বয়ষ্কদের প্রদান করা হয়ে থাকে। আর একজন শিশু সন্তানের জন্য যাদের বয়স ২ বছরের বেশি বা ২ বছর তাদের ক্ষেত্রে 0.5 মিলি হারে ডোজ দেওয়া হয়। তবে উক্ত এই সকল ঔষধের ডোজ একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ি গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় আপনি মহা বিপদে পড়তে পারেন।

    টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম

    টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক এর মধ্যে আমরা কিছু ঔষধের নাম সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা আমরা আরো কিছু সম্পর্কে জানেত পারবো। বর্চিতমান চিকিৎসা ব্যাবস্থা অনেক উন্নত হওয়ায় টাইফয়েড রোগের অনেক চিকিৎসা বের হয়েছে। আর সেই চিকিৎসার জন্য অনেক ঔষধ ও বের হয়েছে। আর এই সকল ঔষধ ব্যাবহারের মাধ্যমে এবং চিকিৎসার জন্য বর্তমানে বাংলাদেশে এই রোগে মৃত্যুর হার ১% এ নেমে এসেছে।
    টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম
    টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় ব্যাবহৃত ঔষধের নামগুলো হলো
    • অ্যাম্পিসিলিন
    • ক্লোরাম্ফেনিকল
    • অ্যামক্সিসিলিন
    • সিপ্রোফ্লক্সাসিন
    • টাইফিম ভি ইনজেকশান
    • ভ্যাক্সফয়েড ইনজেকশান
    এই সকল ঔষধ ব্যাবহার করা হলেও ডাক্তারেরা এই রোগের চিকিৎসার জন্য অনেক পরিমাণে পানি এবং স্যালাইন গ্রহণ করতে বলে থাকেন। তাই আমাদের এই সকম বিষয়ে একজন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

    টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা

    প্রশ্নঃ টাইফয়েড জ্বর হলে ভালো হয় কত দিনে?
    উত্তরঃ একজন ডাক্তারের কাছে থেকে সম্পূর্ণ ভালোভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করলে ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যেই এই জ্বর থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

    প্রশ্নঃ টাইফয়েড হলে কি কি সমস্যা হয়?
    উত্তরঃ টাইফয়েড হলে প্রচন্ড পরিমাণে মাথাব্যাথা, গলা ব্যাথা, শরীর দূর্বল, জ্বর ১০৩ - ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত হতে পারে।

    প্রশ্নঃ টাইফয়েড রোগের চিকিৎসা না করলে কি হয়?
    উত্তরঃ টাইফয়েড রোগের চিকিৎসা যদি না করা হয়ে থাকে তাহলে বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি ৫ জনের ১ জন মারা যাবে।

    প্রশ্নঃ টাইফয়েডের পর শক্তি ফিরে পাওয়ার উপায়
    উত্তরঃ টাইফয়েডের পর শক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য গ্লূকোজ, পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলের রস, নারিকেল পানি খেতে হবে।

    প্রশ্নঃ টাইফয়েডের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি?
    উত্তরঃ টাইফয়েডের সবচেয়ে ভালো ঔষধ হলো ফ্লুরোকুইনোলোনস, সিপ্রোফ্লক্সাসিন (সিপ্রো) এই সকল অ্যান্টিবায়োটিক।

    প্রশ্নঃ টাইফয়েড জ্বর কত দিন থাকে?
    উত্তরঃ টাইফয়েড জ্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকলেও এক-দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হতে পারে।

    শেষ কথা। টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা - টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক

    টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা - টাইফয়েড জ্বরের এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে আজকের এই পাঠে আমরা আলোচনা করেছি। আপনি যদি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে পড়ে থাকেন, তার মানে আপনি টাইফয়েড এর লক্ষণ সম্পর্কে উপরের নিবন্ধটি পড়েছেন। আশা করি টাইফয়েড এর লক্ষণ সম্পর্কে আপনার সঠিক ধারণা আছে। আমি আশা করি যে তারপরে রোগের লক্ষণ এবং টাইফয়েডের পরিণতি সম্পর্কে আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে।

    উপরের লিখিত টাইফয়েড প্রতিকার সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য বা প্রশ্ন থাকে তবে আপনি অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে আমাদের জানাতে পারেন। স্বাস্থ্য সচেতন যে কেউ টাইফয়েড এর লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের আরও স্বাস্থ্য টিপস এবং রোগের লক্ষণগুলির প্রতিকারের জন্য আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    পেপারস্পট২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url