খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় কোনটি জানেন কি?

সকালে খালি পেটে ছোলা খাওয়ার নিয়মখেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জ্ঞান রাখা উচিত। কারণ যদি আমরা সঠিক সময়ে খেজুর খাই তাহলে এটি ভালোভাবে আকজ করবে। তাই আজকে আমাদের এই সম্পূর্ণ পাঠের মধ্যে জানাবো খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে।
খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়
খেজুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামি বি, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ সহ আরো অনেক উপাদান। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য দারুন উপকার করে থাকে।

পেজ সূচিপত্রঃ

ভূমিকা

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় জেনে যদি খেজুর খান তাহলে এটি স্বাস্থের জন্য অনেকউপকার হবে। আমরা প্রায় সকলেই কম বেশি খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে জানি। এই ফলে নানান ধরণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো কাজ করে থাকে। অনেল বিশেষজ্ঞ ব্যাক্তিগণ জানিয়েছেন যে, আপনি যদি প্রতিদিন সকালে ভিজিয়ে রাখা খেজুর খান তাহলে আপনি অনেক ধরণের স্বাস্থ্যের রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। তাই প্রতিদিন নিয়ম মেনে আমাদের এই খেজুর খাওয়া উচিত।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন তাহলে আপনি খেজুর খাওয়ার নিয়ম, দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত, খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন। তাহলে আর দেরি কেনো চলুন এখন বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে আজকের এই পাঠে জানবো। খেজুর খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিত। কারণ আমরা সকলেই কম বেশি খেজুর খেতে পছন্দ করি। আর এই খেজুর যদি সঠিক সময়ে যদি না খাই তাহলে আমাদের উপকারের থেকে ক্ষতি হবে বেশি। তাই আমাদের এই বিষয় সম্পর্কে সকলেরই জানা উচিত। তাহলে চলুন এখন এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়
ওয়ার্কআউটের পূর্বেঃ যে সকল ব্যাক্তিরা সকালের অথবা বিকেলে ওয়ার্কআউট করেন তাদের জন্য প্রতিদিন ওয়ার্কআউটে যাওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট পূর্বে ২-৪ টি খেজুর খেতে পারেন। কারণ এই খেজুরে থাকা কার্বসগুলি অনেক আস্তে আস্তে নিঃসৃত হতে থাকে। যার জন্য ওয়ার্কআউটের সময় অনেক এনার্জি পাওয়া যায়।

ঘুমানোর পূর্বেঃ ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে যদি প্রতিদিন ২-৪ টি খেজুর খাওয়া যায় তাহলে এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হবে। এতে আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী স্ন্যাক্স রয়েছে। তাই আমাদের প্রতিদিন এটি খাওয়া যেতে পারে।

সকালে খুব থেকে উঠার পরেঃ সকালে খেজুর খেলে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ধ্বংস, গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পরিষ্কার করতে এবং হৃদয় ও লিভার সুস্থ রাখতে অনেক সাহায্য করে থাকে। অনেক গবেষণার মাধ্যমে উঠে এসেছে প্রতিদিন যদি ২-৪ টি করে খেজুর খাওয়া হয় তাহলে এটি শক্তি বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে।

আর তার সাথে সাথে এটি অ্যাফ্রোডিসিয়াক হিসেবেও ও আমাদের শরীরে কাজ করে থাকে। খেজুরে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের ত্বককে ও চুলকে সুস্থ রাখতে অনেক সাহায্য করে থাকে।

খালি পেটে খেজুর খেলে কি হয়

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় মেনে খেজুর খাওয়ার পরে অনেকেই জিজ্ঞেস করেন খালি পেটে খেজুর খেলে কি হয়। আমরা সকলেই কমবেশি খেজুরের অনেক উপকারিতা সম্পর্কে জানি। খেজুরে অনেক পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যেটা আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের মতোন সমস্যার সমাধান করে থাকে। এর পাশাপাশি খেজুর খেলে আরো অনেক উপকারিতা হয় সেই সম্পর্কে সবিস্তারে নিম্নে বর্ণনা করা হয়েছে।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করেঃ খেজুরে অনেক পরিমাণে আয়রন থাকে, যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লবিনের মাত্রা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি করে। যার জন্য আমাদের শরীরে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি করে। আর যদি প্রতিদিন সকালে খেজুর খান তাহলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।

হার্টের সমস্যার সমাধান করেঃ যেসকল ব্যাক্তিদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য খেজুর অনেক উপকারি একটি খাবার। তার কারণ হলো খেজুরে থাকা উপাদান দুর্বল হার্ট কেউ অনেক মজবুত করে তোলে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর খান তাহলে আপনার হার্টের সমস্যার কিছুদিনের মধ্যেই অনেক উপকার পাবেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ খেজুরে থাকা উপাদান ক্যান্সারের প্রতিরোধ করতেও সক্ষম। আর তাছাড়াও আমাদের মুখগহ্বরের ক্যান্সার প্রতিরোধেও অনেক ভালো কাজ করে থাকে।

চুলের গোড়া শক্তিশালি করেঃ আমাদের চুলের অনেক জটিলতার কারণে আমাদের চুল পরে যায়, চুল শুষ্ক হয়ে যায়। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি প্রতিদিন ২-৩ টি খেজুর খান। কারণ খেজুরে যে তেল থাকে সেটা আমাদের শরীরের চুলের জন্য অনেক ভালো একটি উপাদান।

ত্বককে টানটান করেঃ আমাদের অনেকের দেখবেন বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে শরীরের মুখের চামড়া কুচকে যায়। আমাদের ত্বকের জন্য উপকারি ভিটামিন বি এই খেজুরে বিদ্যমান রয়েছে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর খান তাহলে দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই আপনার এই সমস্যা ঠিক হয়ে গিয়েছে।

মস্তিষ্ক সচল রাখেঃ খেজুরের গুণের মধ্যে সবথেকে বড় একটি গুণ হলো এটি। খেজুর মস্তিষ্ককে সচল ও প্রাণবন্ত রাখে। আর তার সাথে সাথে এটি আমাদের শরীরের প্রায় অনেক পরিমাণে শক্তির যোগান দিয়ে থাকে।

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় এ খেজুর খাওয়ার জন্য আমাদের দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুর খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের কতগুলো উপকারিত হয় এ সম্পর্কে আমাদের সকলেরই প্রায় কমবেশি ধারণা রয়েছে। তাইতো রমজান মাসে সকলে কমবেশি খেজুর খেয়ে থাকেন। খেজুরে অনেক পরিমাণে পুষ্টিগুণ বিদ্যমান রয়েছে। এখন এই পুষ্টিগুণ গ্রহণ করার জন্য আমাদের প্রতিদিন থেকে কতগুলো খেজুর খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে আমাদের সকলের জেনে নেওয়া উচিত।
দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত
প্রতিদিন আমাদের প্রায় ৪-৫ টি খেজুর খেলেই যথেষ্ট। আর এই ৪-৫ টি খেজুর এই পাওয়া যাবে প্রায় 277 ক্যালোরি। আপনি যদি তাই এর থেকে বেশি পরিমাণে খেজুর গ্রহণ করেন, তাহলে আপনার শরীরের ওজন কমার বদলে আরো বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। তাহলে চলুন এখন আমরা জেনে নেই একটি খেজুরে কতটুকু পরিমাণ উপাদান থাকে।

একটি খেজুরের পুষ্টির মান উপাদান গুলো হলঃ
  • কার্বস ৪৪ শতাংশ
  • ডায়েটারি ফাইবার ৬.৪-১১.৫ শতাংশ
  • প্রোটিন ২.৩-৫.৬ শতাংশ
  • চর্বি ০.২-০.৫ শতাংশ
এই সকল উপাদান ছাড়াও আরো কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো পরিমাপ ছাড়াই রয়েছে। সেই সকল উপাদানগুলো হল
  • আয়রন
  • ম্যাগনেসিয়াম
  • তামা
  • ক্যালসিয়াম
  • সোডিয়াম এবং
  • প্রয়োজনীয় ভিটামিন
আশা করছি আপনি এখন পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছেন আপনাকে প্রতিদিন কতগুলো খেজুর খেতে হবে। আর এর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে আপনি যদি গ্রহণ করেন তাহলে আপনার কি কি হতে পারে সেই সম্পর্কে নিচের টপিকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

অতিরিক্ত খেজুর খেলে কি হয়

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় জেনে যদি আপনি খেজুর অতিরিক্ত মাত্রায় খেয়ে নেন তাহলে অবশ্যই আপনার অতিরিক্ত খেজুর খেলে কি হয় এই বিষয়ে জানা উচিত। আমরা প্রায় সকলেই জানি খেজুর অনেক উপকারী একটি ফল। যেটি আমাদের শরীরের নানা রকম উপকার সাধন করে থাকে। খেজুরের যে সকল উপকার রয়েছে সেই সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে জানতে পেরেছি। এখন আমরা জানবো খেজুর অতিরিক্ত খেলে আমাদের কি কি সমস্যা হতে পারে।

আমরা সকলেই জানি অতিরিক্ত কোন জিনিসই ভালো নয়। সকল জিনিসই পরিমানের মধ্যে রাখতে হবে। আর পরিমাণের একটু অতিরিক্ত হলেই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পুষ্টিবিদরা বলছেন খেজুর যতই উপকারী হোক না কেন আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার জন্য যে সকল সমস্যা গুলো হতে পারে সেগুলো নিয়ে বর্ণনা করা হলো।

পেটের সমস্যাঃ সকল পুষ্টিবিদায় বলেছেন, যদি আপনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খান তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছাড়াও পেট ফাঁপা এবং ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় আমাদের খাবারের হজম প্রক্রিয়া অনেক সহজ করে। তবে আপনি যদি অতিরিক্ত গ্রহন করে ফেলেন তাহলে এটি হতে পারে হিতের বিপরীত।

ত্বকের সমস্যাঃ আমরা সকলেই জানি খেজুর আমাদের দেশের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়। আর এটি সংরক্ষণ করে নিয়ে আসার জন্য খেজুরের সালফাইড নামক রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। এর রাসায়নিক উপাদান আমাদের শরীরের ভেতরে বাইরে বিভিন্ন রকমের প্রভাব ফেলে। তার ফলে আমাদের ত্বকের র‍্যাস ওঠা, চুলকানি হওয়া, শরীর লাল হয়ে যাওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ওজন বৃদ্ধিঃ আমাদের দেশের প্রায় সকলে শরীরের ওজন কমার জন্য খাবারের তালিকা খেজুর রাখেন। তবে আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না একটি খেজুরের পরিমাণ প্রায় 2.8 গ্রাম। তবে আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর গ্রহণ করে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই আপনি প্রতিদিন চারটের বেশি খেজুর খাবেন না।

শ্বাসকষ্টের সমস্যাঃ পুষ্টিবিদরা বলছেন যে, যদি আপনি বেশি পরিমাণে খেজুর খান তাহলে আপনার শ্বাসকষ্টের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই যে সকল ব্যক্তির শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে পুষ্টিবিদরা তাদেরকে খেজুর খাওয়ার জন্য নিষেধ করেছেন। আর তাই বিভিন্ন ডাক্তার ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের খেজুর খাওয়ার জন্য নিষেধ করে থাকেন।

এলার্জির সমস্যাঃ যে সকল ব্যক্তিদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে খেজুর খাওয়া একদমই উচিত নয়। অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খেলে এলার্জি দেখা হতে পারে।

শুকনা খেজুর খেলে কি হয়

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় জেনে অনেকেই শুকনাই খেজুর খান। কিন্তু আপনি জানেন কি শুকনা খেজুর খেলে কি হয়? চলুন জেনে নেই। আমরা প্রায় সকলেই সকালে দুই থেকে তিনটি অথবা চারটি শুকনো খেজুর খেয়ে থাকি। অনেকে এটি কিছুদিন খান তারপরে বাদ দিয়ে দেন। আবার অনেকে রয়েছে যারা সারা বছর এই অভ্যাস চালিয়ে যান। তবে আমাদের জানা উচিত এই শুকনো খেছুর খেলে কি হয়। চলুন তাহলে এই সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক।

ক্লান্তি হ্রাসঃ বিভিন্ন প্রকার উপকারী উপাদান পাওয়া যায়। তার মধ্যে রয়েছে গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ অথবা সুক্রোসের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিভিন্ন সুগার। যেটা আমাদের রক্তে মিশা মাত্রই আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে দেয় এবং এনার্জির যোগান দেয়। তাই আমাদের ক্লান্তি খুব তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যায়। তাই আপনার যখন ক্লান্ত লাগবে তখনই দুই থেকে তিনটি খেজুর খেতে নিতে ভুলবেন না।

শরীরের হাড় মজবুত করেঃ খেজুরে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়ামের মতো বিভিন্ন ধরণের ধরণের উপাদান। যা আমাদের শরীরের হাড়কে মজবুত করে। তাই শরীরের হাড়কে মজবুত করতে ডাক্তাররা খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

কোষ্ঠকাঠিন্যের মহৌষধঃ যে সকল ব্যক্তিগণ কোষ্ঠকাঠিন্য এই রোগে ভুগছেন তারা প্রতিদিন নিয়মিত খেজুর খান। কারণ আয়ুর্বেদ বলে পেটের এই ধরনের বিভিন্ন অসুখের জন্য এই খেজুর মহৌষধ এর মত কাজ করে।

মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি করেঃ আমাদের মস্তিষ্কের পদাহের কারণে এক ধরণের IL-6 নামক পদার্থ জমতে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যদি কোন ব্যাক্তি নিয়মিত খেজুর খায় তাহলে তার মস্তিষ্কের IL-6 অনেক কমে যায়।

খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় জানার পরে অনেকেই কোন প্রকার খেজুর খাওয়ার নিয়ম না মেনেই খেজুর খেয়ে ফেলেন। কিন্তু এটি মোটেও উচিত নয়। আমরা সকলেই ইতিপূর্বে জানতে পারলাম খেজুর খেলে কি কি হয়। আর তার সাথে এটাও জানতে পারলাম আমাদের প্রতিদিন কতগুলো করে খেজুর খাওয়া উচিত। এই পর্বে আমরা জানতে পারবো খেজুর খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। আপনি যদি এই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক।
খেজুর খাওয়ার নিয়ম
আমাদের দেশের সবচাইতে খেজুর খাওয়ার পাঁচিল পদ্ধতি হচ্ছে একটি সম্পূর্ণ খেজুর মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে বেঁচে ফেলে দেয়া। তবে সব সময় একই রকম একইভাবে খেতে একঘেয়ে লেগে যেতে পারে। তাই আপনি চাইলে ভিন্ন পদ্ধতিও ট্রাই করতে পারেন। এতে আপনি বিভিন্ন স্বাদও টেস্ট করতে পারবেন এবং সাথে সাথে আপনার পোস্টের চাহিদা ও মিটে যাবে।

দুধের সাথে খেজুরঃ রাতে এক গ্লাস দুধে দুইটি অথবা তিনটি খেজুর নিয়ে কেটে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে দুধসহ খেজুর চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার শরীরের পুষ্টির অনেক যোগান মিটবে সাথে সাথে আপনি অনেক উপকারিতা বোধ করতে পারবেন।

খেজুরের কেকঃ এই পদ্ধতিতে আপনি কেক যেভাবে তৈরি করা হয় সেই ভাবেই তৈরি করবেন। শুধুমাত্র একটি জায়গায় পরিবর্তন করতে হবে সেটি হল, কেকের চিনির জায়গায় আপনি খেজুরের পেট ব্যবহার করবেন। এর জন্য খেজুর সারারাত ভিজিয়ে রেখে ব্লেন্ডারের মধ্যে দিয়ে পেস্ট করে তৈরি করে নিবেন।

এতে করে খুব সহজে কেকের মিশ্রণের সাথে মিশে যাবে। খেজুরের এই মিষ্টিতে আপনি এক নতুন অভিজ্ঞতার স্বিকার হবেন। আর খেজুরের মিষ্টির ফলে বাড়বে খাজুরের অনেক পরিমাণে স্বাদ। আর চিনি না থাকার কারণে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কমে যাবে।

খেজুরের মিল্কশেকঃ যারা প্রতিদিন মিল্কশেদ খেতে পছন্দ করেন, সেই সকল ব্যাক্তিগণ ঘরে বসেই আপনার জন্য মিল্কশেক তৈরি করে নিতে পারেন। তার জন্য খেজুর প্রথমে ভালোভাবে ভিজিয়ে নিতে হবে। তার পরে খেজুরের বিচি বের করে ফেলে দিতে হবে।

এর পরে ব্লেন্ডারে নিয়ে খেজুরের পেস্ট করে নিতে হবে। খেজুরের পেস্ট করা হয়ে গেলে সেটি দুধ দিয়ে আবার ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তাহলে তৈরি হয়ে গেলো আপনার খেজুরের মিল্কশেক। আপনি যদি চান তাহলে আপনার পছন্দ মতো এর সাথে বিভিন্ন ধরণের ফল অথবা ফ্লেভার ও যুক্ত করে নিতে পারেন।

খেজুরের সালাদঃ বিভিন্ন মৌসুমে আমরা বিভিন্ন ধরণের ফলের সালাদ খেয়ে থাকি। আর এই সালাদের সাথে আপনি চাইলে ছোট ছোট করে খেজুর মিশিয়ে নিতে পারেন। তাতে করে সালাদের সাথে খেজুর ও খাওয়া হয়ে যাবে। আর আপনার পুষ্টির যোগান ও ঠিক মতো থাকবে।

খেজুরের পুষ্টি উপাদান

অনেকেই জানতে চান খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় মেনে খেজুর খেলে খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে। খেজুরের সকল উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের সবার পূর্বে খেজুরের পুষ্টি উপকারিতাগুলো সম্পর্কে জানা উচিত। তাহলে চলুন এখন আমরা সবার আগে খেজুর কি কি পুষ্টি উয়াপাদান থেকে সেই সম্পর্কে জেনে নেই।

খেজুরের পুষ্টি উপাদানগুলো হলোঃ
  • ক্যালসিয়াম
  • ম্যাগনেসিয়াম
  • পটাশিয়াম
  • ম্যাগানিজ
  • প্রোটিন
  • ফসফরাস
  • সোডিয়াম
  • জিংক
  • জল
  • কার্বোহাইড্রেট
  • আয়রন
  • ফ্যাট
  • ভিটামিন বি ৬
  • ভিটামিন ই
এই ছাড়াও প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরের সকল পুষ্টি উপাদানগুলো হলো

পুষ্টি উপাদান

পরিমাণ (প্রতি ১০০ গ্রামে)

ক্যালোরি

২৭৭ কিলোক্যালরি

কার্বোহাইড্রেট

৭৪.৯৭ গ্রাম

ফাইবার

৬.৭ গ্রাম

ম্যাগনেসিয়াম

০.২৯৬ মিলি

ভিটামিন বি

০.২৪৯ মিলি

ভিটামিন ই

০.০৫ মিলি

আয়রন 

০.৯০ মিলি

প্রোটিন

১.৮১ গ্রাম

মোট চর্বি

০.১৫ গ্রাম

ম্যাঙ্গানিজ

৫৪ মিলি

সোডিয়াম 

২ মিলি

ক্যালসিয়াম 

৩৯ মিলি

জিংক 

০.২৯ মিলি

পটাসিয়াম 

৬৯৬ মিলি

জল 

২০.৫ গ্রাম

সোডিয়াম

২ মিলি

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় মেনে আমরা তো খেজুর খাবো। কিন্তু আপনি জানেন কি খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাগুলো কি কি। না জানলে চলুন জেনে নেই। আমরা সকলেই জানি যে যার উপকারী দিক রয়েছে আবার সেই জিনিসেরই অপকারিতা ও রয়েছে। তেমনি খেজুরের প্রায় অনেকগুলো উপকারিতা এবং কিছু অপকারিতা রয়েছে। এই বাটে আমরা প্রথমে খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে জানব আর তারপরও ভোট দিতে খেজুরের কিছু অপকারিতা সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

খেজুরের উপকারিতাগুলো হলো
  • খেজুর আমাদের খাবারের হজম শক্তির উন্নয়ন করে
  • শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য সহযোগিতা করে
  • আমাদের শরীরের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখে
  • হাড় গঠনে সহযোগিতা করে এবং হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে
  • মস্তিষ্কের ব্র্যান্ডের তীক্ষ্ণ করে
  • পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
  • চুল সিল্কি এবং নখ সুন্দর রাখে
  • রক্ত হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে
  • হার্ট সুস্থ রাখে
  • শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • শরীরের ফোলা কমাতে সহায়তা করে
এগুলো ছিল খেজুরের উপকারিতা দিক। এখন খেজুরের কিছু অপকারিতার দিকে রয়েছে। খেজুরের উপকারিতা গুলো হল
  • অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে
  • মাত্রা অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার ফলে কিডনির সমস্যা হতে পারে
  • অতিরিক্ত মাত্রায় খেজুর খাওয়ার জন্য পেটের সমস্যায় যেমন বদহজম, ডায়রিয়া এরকম ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।

খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে

আমরা সকলেই জানি খেজুর অনেক উপকারি একটি ফল। এই ফল খাবারের যে সকল ব্যাক্তি ডায়েট করেন তারা তাদের খাবার তালিকায় এই সকল খাবার রেখে থাকেন। তবে আপনি যদি এই খেজুর অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহন করে থাকে তাহলে আপনার ওজন অনেক বৃদ্ধি পারে। কারণ খেজুরে অনেক পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে।

একটি খেজুরে খেলে সেখান থেকে পাওয়া যাবে প্রায় ২৩ কিলোক্যালোরি। আর যদি ১০০ গ্রাম খেজুর খেয়ে থাকি তাহলে আমরা পাবো ২৮২ কিলোক্যালোরি। যেখান থেকে আমরা বুঝতেই পারতেছি যে খুবই অল্প পরিমাণে খাবার খেয়ে আমরা অনেক পরিমাণে ক্যালরি পেতে পারি। তাই আপনি যদি শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে খেজুর খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।

খেজুর সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃ খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন?
উত্তরঃ প্রতিদিন শরীর চর্চা করার ২০-৩৫ মিনিট পূর্বে এবং রাতে খুমাতে যাওয়ার পূর্বে খেজুর খাওয়া উপযুক্ত সময়।

প্রশ্নঃ খেজুর কি প্রাকৃতিক মিষ্টি?
উত্তরঃ হ্যা। অবশ্যই খেজুর একটি প্রাকৃতিক মিষ্টি।

প্রশ্নঃ প্রতিদিন কতটি খেজুর খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ প্রতিদিন ২-৫ টি খেজুর খাওয়া উচিত।

প্রশ্নঃ খেজুর খেলে কি মোটা হয়ে যায়?
উত্তরঃ হ্যা। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খান তাহলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেয়ে যাবে।

প্রশ্নঃ খেজুর এ কি কি আছে?
উত্তরঃ পাকা খেজুরে প্রায় ৮০ শতাংশ চিনিজাতীয় উপাদান রয়েছে। আর বাকি অংশটুকুতে বিভিন্ন উপকারি খাদ্য উপাদান রয়েছে।

প্রশ্নঃ কোন খেজুর খেলে ওজন বাড়ে শুকনো না ভেজা?
উত্তরঃ শুকনো খেজুরে খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। কারণ শুকনো খেজুর পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার এবং আয়রনের মতো বিভিন্ন পুষ্টিতে ভরপুর।

প্রশ্নঃ প্রতিদিন কত গ্রাম খেজুর খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম খেজুর খাওয়া উচিত।

লেখকের মন্তব্য

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আর এই রকম আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন ফ্রীতে পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পেপারস্পট২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url