আঁচিল দূর করার ক্রিম - আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায়

ফর্সা হওয়ার ডাক্তারি ক্রিমপ্রিয় পাঠক, আঁচিল দূর করার ক্রিম সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন? অথবা আপনি নিশ্চই আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহি। তাহলে আপনি এখন সঠিক জায়গাতেই রয়েছেন। আঁচিল দূর করার ক্রিম সম্পর্কে জানতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
আঁচিল দূর করার ক্রিম
আঁচিলের সমস্যা আমাদের অনেকের মধ্যেই রয়েছে। এটি আমাদের সৌন্দর্যের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই এটি দূর করার জন্য আপনি ক্রিম অথবা হোমিও ঔষধ ব্যাবহার করতে পারেন।

পেজ সূচিপত্রঃ

আঁচিল কেন হয়

আঁচিল দূর করার ক্রিম সম্পর্কে জানার আগে আমাদেরকে আঁচিল কেন হয় এই বিষয়ে জানা জরুরি। তাই আপনি যদি এই বিষয়ে জেনে না থাকেন চলুন তাহলে এখন আমরা জেনে নেই এই সম্পর্কে। কারণ এটি জানা আমাদের ক্ষেত্রে অনেক জরুরী। আপিল হওয়ার কারণ যদি আমরা উপলব্ধি না করতে পারি তাহলে সেটি দূর করতে পারবো না। তো বন্ধুগন চলুন এ বিষয়ে এখন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আজিল সাধারণত হয়ে থাকে এক ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে। আবার বিভিন্ন সময়ে দেখা যায় আঁচিল কাপড়ের ঘর্ষণের কারণেও হয়ে থাকে। আঁচিল সৃষ্টি করে এমন ভাইরাসের নাম হল হিউম্যান প্যাপিলোমা (Human papilloma viruses)। যেটাকে সংক্ষেপে HPV বলা হয়। এই ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আঁচিল খুব দ্রুত বড় হতে থাকে। তবে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে আঁচিল সবার ক্ষেত্রে একই রকম হয় না।

এই আঁচিল বিভিন্ন জনের শরীরে বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে এই ক্ষেত্রে একসাথে খুব দ্রুত বড় হতে থাকে এমন নয়। অনেকের ক্ষেত্রে খুব দ্রুত বড় হয়, আবার অনেকের ক্ষেত্রে খুব দ্রুত বড় না হয়ে ছোট থেকে যায়। আঁচিলের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ধরনের প্রকারভেদ দেখা যায়। চলুন তাহলে এখন আঁচিলের প্রকারভেদ গুলো জেনে নেই।

সাধারণ আঁচিলঃ এই আঁচিল সাধারণত সকল মানুষের সাধারণত হাতের কনুইতে, হাঁটুতে, অথবা আঙ্গুলের স্থানে দেখা যায়। এই আঁচিলের ক্ষেত্রে আঁচিলটি অনেকটা মাংসর যেমন লাল অংশ রয়েছে তেমন লাল অংশ এবং উপরে ভাগ খসখসে হয়ে থাকে।

যৌনাঙ্গ আঁচিলঃ এই প্রাজাতির আঁচিল পুরুষ অথবা মহিলাদের যৌনাঙ্গে হয়ে থাকে। এই ধরণের আঁচিল ছোট অথবা কিছুটা বড় আকৃতির হয়ে থাকে। এই প্রজাতির আঁচিল দেখতে কিছুটা ফুলকপির ন্যায় হয়ে থাকে। এই প্রজাতির আঁচিল যৌনাঙ্গ ছাড়াও এটি পশ্চাতদেশে ও হয়ে থাকে।

সমান আঁচিলঃ এই প্রকারভেদের আঁচিল সংখ্যায় অনেক বেশি পরিমাণে এবং হাতের অথবা শরীরের উপরিভাগের অংশে কিংবা মুখমন্ডলে হয়ে থাকে।

পেরিঙ্গুয়াল আঁচিলঃ এই প্রজাতির আঁচিল হাতের নখের ঊপরে কিংবা হাতের নখের চারিদিকে হয়ে থাকে।

প্লান্টার আঁচিলঃ এই প্রকারভেদের আঁচিল গুলো আমাদের পায়ের নিচের দিকে অর্থাৎ পায়ের পাতার দিকে হয়ে থাকে। যেটা আমাদের হার তো অসুবিধা সৃষ্টি করে এবং প্রচন্ড ব্যথা হয়।

ফিলিফর্ম ওয়ার্টসঃ এই ধরণের আঁচিল মুখের চারিদিকে হয়ে থাকে। এই প্রজাতীর আঁচিল সংখ্যায় অনেক হয়ে থাকে এবং বেশ খানিকটা লম্বা প্রকৃতির হয়।

আঁচিল দূর করার ক্রিম

আঁচিল দূর করার ক্রিম এর এই পাঠে আমরা ইতিপূর্বে আমরা আঁচিল কেন হয়ে থাকে সেই সম্পর্কে জানলাম। এই আঁচিল দূর করার জন্য কিছু ঔষধ রয়েছে। যেগুলো ব্যাবহার করে আপনার শরীরের আঁচিল দূর করতে পারবেন। তবে ভালো হয় যদি আপনি আঁচিল দূর করার ক্রিম ব্যাবহার করেন। তাহলে চলুন এই পর্যায়ে আমরা জেনে নেই আপনার শরীরের আঁচিল দূর করবেন কোন কোন ক্রিম ব্যাবহার করে।

একটাবার ভাবুন তো আপনার শরীরের এই এতোবড় আঁচিল না আপনি ঢাকতে পারবেন আর নাতো আপনি কাউকে দেখাতে পারছেন। আপনি যতই মেকআপ করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন না কেন আপনার দিকে তাকালে কিন্তু সবার প্রথমে আপনার আঁচিলের দিকেই যাবে। তার থেকে ভালো চলুন কোন কোন ক্রিম ব্যাবহারের মাধ্যমে আপনি শরীরের আঁচিল দূর করতে পারবেন জেনে নেই চলুন।

ওয়ারট অ্যান্ড মোল ভ্যানিশঃ আঁচিলের জন্য এই ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে খুব দ্রুত আপনার শরীরের আঁচিল দূর করতে পারবেন। আপনি যদি খুব তাড়াতাড়ি শরীরের অবাঞ্ছিত আঁচিল দূর করতে চান তাহলে অবশ্যই এই ক্রিমের সাহায্য নিতে হবে। এই ক্রিম যখন আপনি ব্যবহার করবেন তখন আকেল প্রথমে আস্তে আস্তে কালো হবে তারপরে আস্তে আস্তে ধূসর বর্ণের হতে শুরু করবে।

এরপর হালকা থেকে ক্রমান্বয়ে আপনার শরীরের রঙের সাথে মিশে যাবে। এছাড়া বড় যে উপকারী দিকটি হল এই ক্রিম ব্যবহারের পর আপনার শরীরের কোথাও কোন ব্যথা বা জ্বালা করবে না। তবে অন্যান্য সকল ক্রিমের থেকে এই ক্রিমের দাম একটু বেশিই বটে বাজারে। তবে আপনি যদি খুব দ্রুত শরীরের অবাঞ্ছিত আঁচিল দূর করতে চান তবে আমাদের সাজেশন অনুযায়ী এটি হল বাজারের এক নম্বর ক্রিম।

বায়ো-টি হারবালসঃ এই ক্রিমটির নাম হয়তো আপনারা এর আগে শুনে থাকবেন। অথবা এখনই ক্রিমের নাম শুনে বুঝতেই পারছেন এই ক্রিমটি সম্পূর্ণ হারবাল উপাদান দ্বারা তৈরি। যেহেতু এই ক্রিমটিতে অত্যাধিক কোন পরিমাণে কেমিক্যাল নেই তাই এটি আপনার ত্বকের জন্য কোন ক্ষতি করবে না। আপনি যখন থেকে এই ক্রিম ব্যবহার করবেন সেই সময় থেকে মাত্র ৭ দিনের মধ্যে আপনার শরীরের আঁচিল দূর হয়ে যাবে।

আঁচিল দূর করার ক্রিম এর মধ্যে এটি অনেকটাই ভালো একটি ক্রিম। কোন প্রকার চিন্তাভাবনা ছাড়াই আপনি এই ক্রিম ব্যবহার করতে পারবেন। তার প্রধান কারণ হলো এই গ্রাম ব্যবহারের জন্য কোন প্রকার জ্বালা, যন্ত্রণা অথবা সাইড ইফেক্ট করবে না। তবে এই কিরম যদি আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে আশা করা যায় ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনার শরীরে থাকা অবাঞ্ছিত আঁচিল খুব দ্রুতই দূর হয়ে যাবে।

নেভি নো মরঃ আপনার শরীরের যে কোন অংশের আঁচিল যদি দূর করতে চান তাহলে এই ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্রিমের স্পেশালিটি হলো এই ক্রিমটি সম্পূর্ণ অর্গানিক হারবাল উপাদান দিয়ে তৈরি। এটা শুধু আপনার শরীরের আঁচলই নয় আপনার মুখে যদি ব্রণের সমস্যা থাকে তাহলে সেটিও এই ক্রিম ব্যবহার করার মাধ্যমে খুব দ্রুত দূর করতে পারবেন।

এইচ-মোল ফর্মুলাঃ শরীরের আঁচল দূর করার জন্য এই ক্রিমটি অনেক বেশি ফলদায়ক। এই ক্রিমটি বিশেষভাবে তৈরি অর্গানিক হারবাল এবং হোমিওপ্যাথি উপাদান দ্বারা। যেটা খুব সহজেই এবং খুব দ্রুত আপনার শরীরে থাকা আঁচিল দূর করতে সক্ষম। এই টিএমটি ব্যবহারের মাত্র তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে আপনার শরীরে আঁচিলের দাগ দূর করে দিবে।

ডারমাটেন্ডঃ আঁচিল দূর করার জন্য এই ক্রিমটিও হল অনেক উপকারী। এই ক্রিমটি ব্যবহারের মাধ্যমে ন্যাচারাল ভাবে আপনার শরীরের আঁচিল দূর করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ এই ক্রিম ব্যবহার করার পূর্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি যদি নিয়ম করে প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই দেখবেন আপনার শরীর থেকে আঁচিল দূর হয়ে গেছে।

আপনার শরীরে যদি আঁচিল থেকে থাকে তাহলে সেটি কিভাবে কোন ক্রিম ব্যবহার করে দূর করবেন সেই বিষয় সম্পর্কে আশা করছি আপনারা এখন জানতে পেরেছেন। উপরের উল্লেখিত যে কোন ক্রিম ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার শরীরে থাকা আপেল দূর করে নিতে পারবেন। তবে এই সকল আঁচিল দূর করার ক্রিম ছাড়াও আরো কিছু কোম্পানির আঁচিল দূর করার ক্রিম রয়েছে। চলুন তাহলে সেগুলোও এখন জেনে নেই।
  • ইবনে সিনা কম্পানির Keranil Cream (কেরানিল ক্রিম)
  • স্কয়ার সিনা কম্পানির Salicid Cream (স্যালিসিড ক্রিম)
  • ইনসেপ্টা সিনা কম্পানির Kerasol FCL Cream (কেরাসল এফসিএল ক্রিম)
  • এসকায়েফ সিনা কম্পানির Salidex Cream (স্যালিডেক্স ক্রিম)
  • Unifarin
  • Farin
  • Warin
উপরের উল্লিখিত সকল ক্রিমগুলো আঁচিল দূর করার ক্ষেত্রে অনেক ভালো ফলদায়ক। এখান থেকে যেকোন একটি ক্রিম নির্বাচন করে নিয়ে আপনি ব্যাবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার শরীরে থাকা অবাঞ্ছিত আঁচিল দূর করতে পারবেন। তবে আমাদের সাজেশন থাকবে আপনি যেই ক্রিমই ব্যাবহার করেন না কেনো তার পূর্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করলে আরো অনেক বেশি ফলদায়ক হবে।

আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায়

আঁচিল দূর করার ক্রিম যারা ব্যাবহার করতে চাচ্ছেন না তারা চাইলে আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনে সেটি ব্যাবহার করতে পারেন। এখন কোন ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে তো আপনাদের জানা উচিত। আর আপনারা এই সম্পর্কে অনেকে জানতে চান। তাহলে চলুন এখন আমরা সেজন্য জেনে নেই আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।

রসুনঃ আমাদের সকলের বাড়িতে এই মসলাটি থেকে থাকে। যেটি আমরা রান্নার কাজে ব্যবহার করি। এই রসুন রয়েছে অ্যালিসিন রয়েছে উপাদান। যদি আপনার শরীরের আঁচিল দূর করার জন্য অনেক ভালো ফল দেওয়া হবে। তার জন্য প্রতিদিন রসুন থেঁতো করে নিয়ে আঁচিলের উপর লাগিয়ে রাখতে হবে।

পেঁয়াজের রসঃ রসুনের মত পেঁয়াজের মসলাটি আমাদের সকলের বাড়িতেই থাকে। যেটি আমরা রান্নার কাজে ব্যবহার করি। আপনারা হয়তো জানলে অবাক হবেন পেঁয়াজের রয়েছে অ্যান্টিসেপ্টিক গুনাগুন। যেটি শরীর থেকে যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি কমাবে। তার পাশাপাশি এটি যদি আপনি আঁচিলের জন্য ব্যবহার করেন তাহলে সেটিও দূর করতে অনেক সহায়তা করবে।

এজন্য প্রথমে পেঁয়াজ ধুয়ে নিয়ে তারপরে ব্লেন্ডারে কিসে নিয়ে রস বের করে নিন। এরপর সেই পেঁয়াজের রস তুলতে করে ভিজিয়ে নিয়ে আঁখিলের ওপর লাগিয়ে রাখুন। এভাবে নিয়মিত ৭ থেকে ১৪ দিন ব্যবহার করুন তাহলে আশা করছি আপনার আঁচিলের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগারঃ আঁচিল দূর করার জন্য ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করতে প্রথমে তার জন্য আপনাকে অ্যাপেল সিডরের ভিনেগার সংগ্রহ করে নিতে হবে। তারপরে এই ভিনেগারের ভেজানো তুলো আঁচিলের ওপর সারারাত ধরে রেখে দিন। এভাবে আপনি পরপর চার থেকে পাঁচ দিন ব্যবহার করুন। ভিনেগারে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিড থাকার জন্য আপনার শরীরের আঁচলের সমস্যা দূর করতে অনেক ভালো ফলদায়ক হবে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুলঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল ঘরোয়া উপায়ে আপনার আঁচিলের সমস্যা দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। তার জন্য প্রথমে বাজার থেকে প্রথমে এই ভিটামিন এই কাপ ক্যাপসুল সংগ্রহ করে নিন। এরপর সেটি কেটে তেল বের করে নিন। সেই তেল প্রতিদিন রাতে তুলোতে করে ভিজিয়ে নিয়ে আঁচিলের ওপর লাগিয়ে রাখুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার শরীরে থাকা অবাঞ্ছিত আঁচিল দূর হয়ে যাবে।

অ্যালোভেরা জেলঃ আমরা সকলেই জানি অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য অনেক ভালো উপকারী। আপনার শরীরের আঁচিলের সমস্যা দূর করার জন্য প্রতিদিন এই অ্যালোভেরার জেল আঁচিলের ওপর মেসেজ করুন। আঁচিলের উপর এই জেল দেওয়ার পরে যতক্ষণ না শুকিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে যাওয়ার পরে সেটা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিদিন তিনবার ব্যবহার করুন আশা করছি অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।

কলার খোসাঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে আঁচিল দূর করার ক্ষেত্রে কলার খোসা অনেক ভালো ফলদায়ক। এজন্য প্রতিদিন রাতে কলা থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে তারপর সেটি আঁচিলের ওপর দিয়ে ঢেকে রাখুন। কলার খোসা যেন আঁচিলের উপর থেকে সরে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলেই আপনি অনেক ভালো ফলাফল পাবেন ইনশাআল্লাহ।

আনারসের রসঃ সকল ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করার পরে আপনি যদি আঁচিল দূর করতে ব্যর্থ হন তাহলে এক্ষেত্রে আপনি আনারসের রস ব্যবহার করতে পারেন। তার জন্য প্রথমে একটি পাত্রে কিছুটা পরিমাণ আনারসের সঙ্গে লবণ মিশিয়ে নিন। এরপর সেই মিশ্রণটি আঁচিলের ওপর প্রতিদিন লাগান। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে আঁচিলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

আঁচিল দূর করার ঔষধ

ইতিপূর্বে তো আমরা সকলেই আঁচিল দূর করার ক্রিম এবং তার পাশাপাশি আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে পারলাম। এ পর্যায়ে আমরা জানতে চলেছি আচিল দূর করার ঔষধ সম্পর্কে। এই পাঠের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব আঁচিল দূর করার জন্য সব থেকে ভালো ঔষধ কোনটি সেই সকল বিষয় সম্পর্কে। তাহলে চলুন এই পর্যায়ে আমরা জেনে নেই আঁচিল দূর করার ঔষধ সম্পর্কে।

আঁচিল দূর করার জন্য মূলত দুই ধরনের ঔষধ ব্যবহার করা হয়। এখানে প্রথমটি হল এলোপ্যাথিক ঔষধ এবং দ্বিতীয়টি হলো হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। কোন কোন ঔষধ ব্যবহার করা হয় চলুন তাহলে দেখে নেই।

আঁচিল দূর করার এলোপ্যাথিক ঔষধগুলো হলো
  • ইবনে সিনা ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের কম্পানির Keranil Cream (কেরানিল ক্রিম)
  • স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের কম্পানির Cream (স্যালিসিড ক্রিম)
  • এসকারেফ ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের কম্পানির Salidex Cream (স্যালিডেক্স ক্রিম)
  • ইনসেপ্টা ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের কম্পানির Kerasol FCL Cream (কেরাসল এফসিএল ক্রিম)
আঁচিল দূর করার হোমিওপ্যাথিক ঔষধগুলো হলো
  • Staphisagria (স্ট্যাফিসাগ্রিয়া)
  • Graphites (গ্রাফাইটস)
  • Antimonium crude (এন্টিমোনিয়াম ক্রড)
  • Nitricum acidum (নাইট্রিকাম অ্যাসিডাম)
  • Thuja occidentalis (থুজা অক্সিডেন্টালিস)
  • Silicea terra (সিলিসিয়া টেরা)
  • Natrum mur (ন্যাট্রাম মুর)
  • Ferrum picricum (ফেরাম পিক্রিকাম)

আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ

যিনাদের ক্ষেত্রে আঁচিল দূর করার ক্রিম ব্যাবহার করেও কোন কাজ হচ্ছে না তিনাদের জন্য আপনারা বিভিন্ন ক্যাটাগরি অনুযায়ি আঁচিল দূর করার জন্য হোমিও ঔষধ ব্যাবহার করতে পারেন। কোন পর্যায়ের আঁচিলের জন্য আপনি কোন হোমিও ঔষধ ব্যাবহার করবেন এই পর্বের মাধ্যমে আমরা আপনাকে জানাবো। চলুন একনজরে ছকের মাধ্যমে দেখে নেই তাহলে।

আঁচিলের ধরণ

হোমিওপ্যাথি ঔষধ

অনেক দিনের পুরনো আঁচিল

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

সালফার (Sulphur)

থুজা (Thuja Occidentalis)

মুখে আঁচিল

ডালকামারা (Dulcamara)

লাইকোপেডিয়াম (Lycopodium)

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

থুজা (Thuja Occidentalis)

নাকের আঁচিল

থুজা (Thuja Occidentalis)

কষ্টিকাম (Causticum)

চোখের পাতায় আঁচিল

কষ্টিকাম (Causticum)

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

থুজা (Thuja Occidentalis)

হাতের আঁচিল

কষ্টিকাম (Causticum)

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

থুজা (Thuja Occidentalis)

ঘাড়ে আঁচিল

থুজা (Thuja Occidentalis)

কষ্টিকাম (Causticum)

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

ব্যাথাযুক্ত আঁচিল

হিপার সালফ (Hepar Sulph)

সাধারন আঁচিল

নেট্রাম সালফ (Natrum Sulph)

সিপিয়া (Sepia)

ফুলকপির মত আঁচিল

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

সাইলেসিয়া (Silesia)

থুজা (Thuja Occidentalis) 1000

শুকনো, ‍চুলকানি, চ্যাপ্টা

থুজা (Thuja Occidentalis) 

আঁচিলের মধ্যে ভাতের মতো

এন্টিম ক্রুড (Antim Crud)

শক্ত আঁচিল

কষ্টিকাম (Causticum)

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

এন্টিম ক্রুড (Antim Crud)

সাইলেসিয়া (Silesia)

থুজা (Thuja Occidentalis)

কেলি মিউর (Kali Mur)।

বড় আঁচিল

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

ডালকামারা (Dulcamara), থুজা (Thuja Occidentalis)

ছােট আঁচিল

কষ্টিকাম (Causticum)

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

থুজা (Thuja Occidentalis)

ডালকামারা (Dulcamara)

যােনিতে আঁচিল

থুজা (Thuja Occidentalis)

লিঙ্গে আঁচিল

থুজা (Thuja Occidentalis)

নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

তথ্যসূত্রঃ বিসমিল্লাহ্ হোমিও কেয়ার


অনেক মানুষের এমন ভুল ধারণা রয়েছে আমি যদি হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাই তাহলে আমাকে অনেক নিয়ম মেনে চলতে হবে। কিন্তু বিষয়টি আসলে একদম তেমন নয়। এটি আসলে অনেকের ভুল ধারণা। আপনি হোমিও ঔষধ খাওয়ার সময় যে কোন কিছু খেতে পারবেন কোন সমস্যা নেই। আর যদি এই বিষয়টি হয় আপনার আঁচিলের বিষয় তাহলে হোমিও ঔষধ খাওয়া আপনার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী হবে। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

মুখের ছোট আঁচিল দূর করার উপায়

আঁচিল দূর করার ক্রিম, আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যাদের মুখের ওপর ছোট আঁচিল রয়েছে। সেটি লাল সে ধরনের অথবা কালো ধরনের। এই আঁচিল সাধারণত আমাদের মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করে। তাই মুখের আঁচিল দূর করার জন্য কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে এই মাঠে আমরা আপনাদেরকে জানাবো। চলুন তাহলে মুখের আঁচিল কিভাবে দূর করবেন তার ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক।

আলুঃ আমাদের সকলের বাড়িতে আলো থাকে। এই ছোট্ট একটি এক টুকরা আলো নিয়ে আপনি নিমিষেই মুখের আঁচিল দূর করে নিতে পারবেন। এর জন্য প্রতিদিন সকালে অথবা রাতে ছোট্ট এক টুকরা আলো নিয়ে পাঁচ মিনিট ধরে আঁচিলের অংশে ঘষতে থাকুন। এভাবে প্রতিদিন দিনে ২ বার ব্যবহার করলেই কয়েকদিনের মধ্যে আপনার আঁচিল সম্পূর্ণ দূর হয়ে যাবে।

অ্যালোভেরা জেলঃ আমরা সকলেই জানি যে এলোভেরা জেল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। ব্যবহার করে আপনার শরীরের আঁচিল দূর করার জন্য প্রথমে যে অংশটিতে আঁচিল হয়েছে সেই অংশটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এরপর এলোভেরা জেল নিয়ে আঁচিলের অংশটিতে লাগিয়ে দিন। যদি আপনার পক্ষে সম্ভব হয়ে থাকে তাহলে প্রতিদিন ২ ঘন্টা এভাবে ব্যবহার করুন। তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার আঁচিলের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

রসুনঃ তরকারিতে ব্যবহার করা হয় যে রসুন এই রসুন ব্যবহার করে আপনি আপনার মুখের দূর করে নিতে পারবেন। এর জন্য রসুন থেতো করে নিয়ে তার থেকে রস বের করে নিন। সেই রস যদি আপনার পক্ষে সম্ভব হয় তাহলে সকালে এবং রাতে 30 মিনিট ধরে ব্যবহার করুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলেই আপনার আঁচিল তো থাকবে না। সাথে সাথে আপনার আঁচলের কোন দাগ ও থাকবে না।

হলুদঃ যুগ যুগ ধরে হলুদ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে আসতেছে প্রাকৃতিক একটি উপাদান হিসেবে। তাই আঁচিলের চিকিৎসাতেও হলুদের ব্যবহার অনস্বীকার্য। এর জন্য এক চামচ হলুদের গুঁড়ো এবং তার সাথে একটি ভিটামিন সি এর ট্যাবলেট মিশিয়ে নিন। এরপরে যদি সম্ভব হয় মধু মিশিয়ে নিন আর না হলে এভাবে প্রতিদিন দুবার ব্যবহার করুন। আঁচিলের অংশটিতে লাগানোর পরে যখন এটি শুকিয়ে আসবে তখন এটি পরিষ্কার পানি ব্যাবহার করে ধুয়ে ফেলুন।

মধুঃ আঁচিল দূর করার ক্ষেত্রে মধু ও অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এজন্য আপনার শরীরের আঁচিলের ওপর মধু লাগিয়ে নিয়ে সেখানে কোন কিছু দিয়ে আটকে রেখে দিন। এভাবে প্রতিদিন এক ঘন্টা করে লাগিয়ে রাখুন। তারপরে আঁচিলের অংশটি ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দিনে তিনবার ব্যবহার করলে আপনার অনেক উপকার হবে। আশা করছি আপনি ৭ দিনের ভেতরে অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।

বিশেষ সতর্কতা

আমরা সকলেই রোগমুক্তির আশায় বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবন করি। তবে আমাদেরকে জানা উচিত এ ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যদি আপনি সতর্কতা অবলম্বন না করেন সে ক্ষেত্রে আপনার রোগের সমস্যা দূর তো হবেই না বরং আপনাদের রোগ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। যার ফলে এটি আরো অনেক বেশি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

এক্ষেত্রে আমাদের সাজেশন থাকবে আপনি যে কোন ঔষধই সেবন করেন না কেন তারপর অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সেই ডাক্তারের দেখানো সকল নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারই পারেন আপনার সঠিক নির্দেশনা দিতে। আশা করছি বিষয়টি সম্পর্কে আপনি পুরোপুরি অবগত হয়েছেন।

আঁচিল দূর করার ক্রিম নিয়ে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃ ওয়ার্টস এর জন্য কোন ঔষধ ভালো?
উত্তরঃ ওয়ার্টস এর জন্য ১৭ শতাংশ স্যালিসিলিক অ্যাসিড দ্রবণ ঔষধ ভালো।

প্রশ্নঃ আঁচিল কত প্রকার?
উত্তরঃ আঁচিল সাধারণত ৩ প্রকারের। সেগুলো হলো
  • অ্যাক্রোকর্ডন বা স্কিন ট্যাগ
  • ভেরুকা বা ওয়ার্টস
  • মোল
প্রশ্নঃ আচিল কি ক্ষতিকর?
উত্তরঃ বিশেষজ্ঞরা জানান আঁচিল শরীরের জন্য কোন ক্ষতিকর নয়। তবে দেহের বিভিন্ন স্থানে আঁচিল অনেক সময় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।

প্রশ্নঃ আঙুলে বারবার আঁচিল কেন হয়?
উত্তরঃ সারাদিন বারবার নখ কামড়ানোর ফলে আঙুলের চারিদিকে আঁচিল হতে পারে।

প্রশ্নঃ মুখে আঁচিল হওয়ার কারণ কি?
উত্তরঃ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) এর সংক্রমণের কারণে মুখে আঁচিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

লেখকের মন্তব্য। আঁচিল দূর করার ক্রিম

আঁচিল দূর করার ক্রিম সম্পর্কে আজকে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আজকের আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার যদি কোন মতামত থাকে তহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পেপারস্পট২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url